শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
সংসদে অর্থমন্ত্রী

বাজেটের দ্বিগুণ টাকার অডিট আপত্তি সরকারি প্রতিষ্ঠানে

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে অডিট আপত্তিতে জড়িত অর্থের পরিমাণ প্রস্তাবিত বাজেটের দ্বিগুণেরও বেশি। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অডিট আপত্তিতে জড়িত অর্থের পরিমাণ ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৭৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

সংসদের বাজেট অধিবেশনে গতকাল মুহিবুর রহমান মানিকের প্রশ্নের জবাবে সংসদকে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী। সংসদে দেওয়া মন্ত্রীর তথ্যানুযায়ী, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৮ লাখ ৭৬ হাজার ১৩টি অডিট আপত্তি রয়েছে। যার সঙ্গে জড়িত অর্থের পরিমাণ ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। এসব অডিট আপত্তির মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ মন্ত্রণালয়ে ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৬০টি অডিট অনিষ্পন্ন। যার সঙ্গে জড়িত অর্থের পরিমাণ ৪৫ হাজার ২৯২ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এর পরেই রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থান। এ মন্ত্রণালয়ে অনিষ্পন্ন অডিট ২৩ হাজার ৪৩টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকা। এর পরই রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এখানে অনিষ্পন্ন অডিট ৬৮ হাজার ১৯৪টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা। একইভাবে অর্থ বিভাগে অনিষ্পন্ন অডিট ৬ হাজার ৩৪৪টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ১৯ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে অনিষ্পন্ন অডিট ৮ হাজার ১৬০টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। সড়ক বিভাগের অনিষ্পন্ন অডিট ১৫ হাজার ১৪৮টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ১৮ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ে অনিষ্পন্ন অডিট ২১ হাজার ৬৮০টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে অনিষ্পন্ন অডিট ৪২ হাজার ৬৮টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ১৪ হাজার ২০৯ কোটি টাকার বেশি। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে অনিষ্পন্ন অডিট ৫৪ হাজার ৬২১টি। জড়িত অর্থের পরিমাণ ৩৪ হাজার ৪৩ কোটি টাকা।

রিজার্ভ চুরিতে জড়িতরা আইনের আওতায় আসবে : আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি দেশি বা বিদেশি যে-ই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনতে সরকার বদ্ধপরিকর। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১৪ এর ধারা ৪, তথ্য ও  যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ধারা ৫৪ এবং বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৯ এর আলোকে এজাহার দায়ের করে, যা পরে মামলা হিসেবে গৃহীত হয়। বর্তমানে সিআইডি এ মামলা তদন্ত করছে।

 পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং ও চুরি/প্রতারণা সংক্রান্ত অপরাধের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সংরক্ষিত ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি হওয়া টাকার মধ্যে শ্রীলঙ্কার ১৯ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে। এ ছাড়া ফিলিপাইনের ১৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফিলিপাইনের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এন্ট্রি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল বরাবর জমা হয়েছে। যা সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত আছে।

সর্বশেষ খবর