বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিলিয়ন ডলার চুক্তির আশা

চীনের রাষ্ট্রপতি জিনপিংয়ের সফর ১৪-১৫ অক্টোবর

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বিলিয়ন ডলার চুক্তির আশা

চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি আগামী ১৪ অক্টোবর ঢাকা এসে পরদিন ১৫ অক্টোবর ভারতের উদ্দেশে রওনা দেবেন। নয়া দিল্লিতে ১৫ ও ১৬ অক্টোবর ব্রিকস সামিটে অংশ নেবেন জিনপিং। এ সামিট উপলক্ষেই দক্ষিণ এশিয়া সফরে আসছেন তিনি। আকাঙ্ক্ষিত এ সফরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা চাওয়া হবে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৬টি মেগা প্রকল্প থাকছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের আশা, প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের সফরে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করবে ঢাকা ও বেইজিং।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে চীন সফরে গিয়ে চীনের প্রেসিডেন্টকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে আসেন। সে সময়ই সফরের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছিলেন জিনপিং। এখন  সেই সফরে আসছেন। বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তিতে চীনের প্রেসিডেন্টের এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে বেশ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ঢাকা ও বেইজিংয়ে। ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ ও পরামর্শসাপেক্ষে বেশকিছু প্রকল্প চীনের সহায়তার জন্য প্রস্তুত করেছে। মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংসিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খোরশেদ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সফরের বিষয়ে আলোচনা করে এসেছেন। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সফরের সময় ৬টি মেগা প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগের সুস্পষ্ট আশ্বাস প্রত্যাশা করছে ঢাকা। সফরের আগে দুই দেশের নানান পর্যায়ে আলোচনার পর সফরে এ ৬ প্রকল্পের বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ৩০০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ ও উপকূলরক্ষা বাঁধ, আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত ডুয়েল-গেজ রেললাইন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রিপেইড মিটার প্রকল্প, মংলা বন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি উন্নয়ন ও ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে সম্প্রসারণ। এ ছাড়া কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল ও এর কাছাকাছি চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে। টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনও করতে পারেন দুই দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, ‘চীনের রাষ্ট্রপতি যেখানে যান সেখানে তিনি এর সর্বোচ্চ প্রভাব রাখার চেষ্টা করেন। সে হিসেবে এই সফরেও গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রায় ৩০টি বড় উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য চীনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আমরা চাই সেগুলোর বাস্তবায়নের জন্য তারা আমাদের অর্থায়ন করুক।’ এ ছাড়া বড় আকারে চীনের বিনিয়োগও প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে চীনের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি এবং তারা এ অর্থ বিনিয়োগ করতে চায়। চীন আশা করে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু বিনিয়োগ পরিবেশ, যাতে তারা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারে। তাদের বিবেচনায় বাংলাদেশ বিনিয়োগের ভালো স্থান। তবে এর জন্য তারা সুষ্ঠু পরিবেশ চায়। ইতিমধ্যেই চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য পৃথক একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ করেছে বাংলাদেশ। এখন চীন এ দেশে একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপন করতে আগ্রহী।

সর্বশেষ খবর