শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

৯৬-তেও পেশায় সক্রিয় বিচারপতি টি এইচ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯৬-তেও পেশায় সক্রিয় বিচারপতি টি এইচ খান

বিচারপতি টি এইচ খান। বিএনপির এক নম্বর ভাইস চেয়ারম্যান। আজ তার ৯৬তম জন্মদিন। ১৯২০ সালের এই দিনে তিনি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ

করেন। এখনো সক্রিয় আইন পেশায়। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টে সবচেয়ে প্রবীণ আইনজীবী তিনি। জটিল মামলা নিয়ে এখনো আইন পেশায় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে লড়ছেন। বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি কিছুটা কমলেও বড়  ধরনের কোনো অসুখে নেই এই বিচারপতি। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে এখনো নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন তিনি। মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের বাসায় আইনি বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি ছাড়াও পত্রিকা পড়েন। বিবিসি, সিএনএনসহ বাংলাদেশের টিভির সংবাদ দেখে সময় কাটে এই ব্যক্তিত্বের। তবে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে চান না তিনি। হাঁটুতে দুর্বলতার কারণে প্রবীণ এই আইনজীবীর কারও সহায়তা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। বাসায় নিজে নিজেই ওয়াকার দিয়ে চলাচল করেন। তার তিন ছেলে আফজাল এইচ খান, ফজলে এলাহী খান ও ফায়সাল এইচ খান। আফজাল এইচ খান আর ফয়সাল এইচ খান আইন পেশায় নিযুক্ত। ফজলে এলাহী খান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। একমাত্র মেয়ে ডা. মাহমুদা ফাতেমা খান রাজধানীর হলি ফ্যামিলিতে চিকিৎসা পেশায় নিযুক্ত। ২০১১ সালের ১৭ মে টি এইচ খানের সহধর্মিণী মারা যান। টি এইচ খানের বড় ছেলে অ্যাডভোকেট আফজাল এইচ খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বাবা এখন সুস্থ। পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। ১৯৬৯ সালের মার্চে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন টি এইচ খান। এর আগে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে ‘সিনিয়র গভর্নমেন্ট প্লিডার’ অ্যাডভোকেট জেনারেলের (বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল) দায়িত্ব পালন করেন। ’৭৩ সালে ফের আইন পেশায় ফিরে যান। একাধিকবার তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি ছিলেন। ’৭৯ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাধারে তিনি আইন ও বিচার, শিক্ষা, ভূমি, প্রশাসন, তথ্য ও বেতার, ধর্ম, যুব ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন প্রবীণ এই বিচারপতি। ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘের অধীনে আফ্রিকার রুয়ান্ডায় গণহত্যার বিচারের জন্য গঠিত ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনালের (আইএসটিআর) বিচারপতি ছিলেন ৫ বছর। ২০০১ সালে সেখান থেকে ফিরে তিনি ফের আইন পেশায় যুক্ত হন। আন্তর্জাতিক আদালতে এশিয়া মহাদেশে টি এইচ খানই একমাত্র বিচারপতি। ময়মনসিংহের ফুলপুর হাইস্কুল থেকে তিনি মেট্রিকুলেশন এবং আনন্দমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেন। একই সঙ্গে আইন বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান লাভ করেন। বেশ কিছুদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ কলেজে অধ্যাপনাও করেন প্রবীণ এই আইনজীবী।

সর্বশেষ খবর