বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক

ভারত থেকে মাদক অস্ত্র প্রবেশে উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত থেকে অস্ত্র ও মাদক প্রবেশ এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক (ডিবি) মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিজিবি ও বিএসএফ ডিজি পর্যায়ে ৪৪তম সীমান্ত সম্মেলন শেষে গতকাল বিজিবি সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সম্মেলনে বিএসএফ ডিজি কে কে শর্মাসহ দুই দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধশত কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় ডিজির নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল এবং বিজিবি ডিজির নেতৃত্বে ২৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি  দল এতে অংশ নেয়। বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পর্যায়ে পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন ২০১৭ সালের অক্টোবরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে। মৃত্যুর ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে গবাদিপশু ও মাদক চোরাচালানপ্রবণ এলাকায় সমন্বিত যৌথ টহল, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণকে আন্তর্জাতিক সীমান্তের বিধিনিষেধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফ কর্তৃক যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা/হত্যার ক্ষেত্রে যৌথভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, শনাক্তকরণ ও মূল্যায়নের বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়।

সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (সিবিএমপি) ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, যেমন— অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক, মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য, জাল মুদ্রা, সোনা ও গবাদিপশু পাচার এবং সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে ফেলা, ডাকাতি, চুরি, অপহরণ ইত্যাদি প্রতিরোধে উভয় পক্ষই সিবিএমপি বাস্তবায়নে সম্মত হয়। বিএসএফ ডিজি ভারতের কারাগারে/সংশোধন কেন্দ্রে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত স্বদেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে তাদের জাতীয়তা যাচাইয়ের কাজ ত্বরান্বিত করার অনুরোধ করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি ডিজি ভুক্তভোগী বাংলাদেশি নাগরিকদের সঠিক নাম, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্য প্রদানের অনুরোধ করেন। এতে করে জাতীয়তা শনাক্তকরণের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে।

বিএসএফ ডিজি বলেন, প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহারের ফলে মৃত্যুর ঘটনা অনেক কমিয়ে আনা গেলেও অপরাধীদের দ্বারা বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএসএফ সদস্যরা কেবল আত্মরক্ষার্থেই প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র দিয়ে ফায়ার করেন। বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম বন্ধে বিজিবির সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বিএসএফ ডিজি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বাংলাদেশে সম্ভাব্য অবস্থান ধ্বংস এবং ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক অপহৃত ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে মুক্তির লক্ষ্যে বিজিবির আরও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি ডিজি সুস্পষ্টভাবে জানান, বাংলাদেশে কোনো ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর ক্যাম্প/অবস্থান নেই। বাংলাদেশ কখনো তার ভূমি অন্য কোনো পক্ষকে বা কোনো রাষ্ট্রের শত্রুপক্ষকে ব্যবহারের সুযোগ দেয় না, দেবে না।

উভয় ডিজি সীমান্ত হাটের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সীমান্ত পর্যটন উত্সাহিত করার লক্ষ্যে নিজ নিজ দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করতে সম্মত হন, যা সীমান্তে বসবাসকারী জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে সহায়ক হবে। জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন বিএসএফ ডিজি।

সর্বশেষ খবর