শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্যারাডাইস পেপারসে নতুন তথ্য

মাল্টায় অর্থ পাচারে ১৮ বাংলাদেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরসহ ১৮ বাংলাদেশি অর্থ পাচারের মাধ্যমে ইউরোপের ক্ষুদ্র দেশ মাল্টায় বিনিয়োগ করে কোম্পানি খুলেছেন। তাঁদের কেউ কেউ ওই সব কোম্পানির পরিচালক আবার কেউবা শেয়ারহোল্ডার। আবার অনেকে একই সঙ্গে পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন। বিদেশের ঠিকানা ব্যবহার করে আরও তিন বাংলাদেশিও মাল্টায় অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। তাঁরা দেশ থেকে অর্থ পাচার করে বিনিয়োগ করেছেন, নাকি প্রবাসে আয়ের অর্থ বিনিয়োগ করেছেন, তা স্পষ্ট নয়। আর বাংলাদেশে ব্যবসারত দুজন বিদেশিও মাল্টায় কোম্পানি খুলেছেন।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কনসোর্টিয়াম আইসিআইজে  গতকাল ‘প্যারাডাইস পেপার্স’ নামের প্রতিবেদনের সর্বশেষ সংযোজনে এসব বাংলাদেশির নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে তাঁরা মাল্টায় কবে, কী নামে কোম্পানি নিবন্ধন করেছেন, কোম্পানিতে তাঁদের পদবি কী—এসব উল্লেখ করে নথি প্রকাশ করেছে। এতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তথ্য সংযুক্ত হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের কে কত টাকা পাচার করেছেন, বা কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশিত নথিতে নেই। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৯১১ কোটি ডলার বা ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আমদানি-রপ্তানির সময় পণ্যের প্রকৃত মূল্য গোপন করে এক বড় অংশ পাচার করেছেন ব্যবসায়ীরা। জিএফআইর তথ্য অনুযায়ী ২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় সাত হাজার ৫৮৫ কোটি ডলার বা ছয় লাখ কোটি টাকারও বেশি। এই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশের প্রায় দুটি জাতীয় বাজেটের সমান। বাংলাদেশে বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রানীতি আইন অনুযায়ী বাংলাদেশিদের অন্য দেশে বিনিয়োগ করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগাম অনুমোদন নিতে হয়। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিদেশে বিনিয়োগ করেছে। তবে প্যারাডাইস পেপার্সে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের কেউই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন নেননি। অর্থাৎ তাঁরা দেশ থেকে অর্থ পাচার করে বিনিয়োগ করেছেন।

সর্বশেষ খবর