রবিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিএনপির কাছে ওবায়দুল কাদেরের তিন প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির কাছে তিনটি প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন। গতকাল বিকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে তিনি বলেন, বিএনপির কাছে আমি তিন প্রশ্নের জবাব চাই।

আমার প্রথম প্রশ্ন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি এবং এরপর এই অধ্যাদেশকে ৫ম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হলো কেন, কোন যুক্তিতে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এর ব্যাখ্যা আমি জানতে চাই। দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে— বিনা পয়সায় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার কাজটি তারা   কেন করলেন? তৃতীয় প্রশ্ন— তড়িঘড়ি করে বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের আট দিন আগে বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে কেন ৭ ধারা বাতিল করে দেওয়া হলো? নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছে বিএনপি— এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রথম বিষয়টি সংবিধান সম্মত নয়। আর দ্বিতীয় বিষয়টি আইনি। তারা যদি মামলা মোকাবিলা করে আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম জিয়াকে মুক্ত করে আনতে পারে, ওয়েলকাম। সরকার যদি বাধা দিত, সরকার যদি বিচার বিভাগকে কোনো প্রকারে প্রভাবিত করতে চাইত- তাহলে বেগম জিয়া এতগুলো মামলা থেকে জামিন পেতেন না। প্রায় ৩০টি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। সরকার যদি হস্তক্ষেপ করত তাহলে কীভাবে এসব মামলা থেকে জামিন পেলেন। ‘খালেদা জিয়াকে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করা হবে’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের দশ বছর হয়ে গেল, এই দশ বছরে বার বার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, সবই সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক, ছোটখাটো আন্দোলনের ডাক নয়। বেগম খালেদা জিয়াও সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু এর সঙ্গে বাস্তবতা কতটুকু এটা আপনারা জানেন। দশ বছরে একটা দিনও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার মতো কোনো আন্দোলন বিএনপি করতে পারেনি। আমরা চাপ অনুভব করেছি, এমন কোনো আন্দোলন বিএনপি করতে পারেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত ব্যর্থ বিরোধী দল আগে কখনো বাংলাদেশে আসেনি। এই ব্যর্থতার জন্য বিএনপির টপ টু বটম সব নেতার পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে বিএনপির কেন ভয়, সেটা আমরা বুঝে ফেলেছি। বিএনপির ভয় হচ্ছে ইভিএমে ভোট হলে তারা আর কেন্দ্র দখলের পুরনো অভিযোগ আনতে পারবে না, ভোট জালিয়াতির কথা বলতে পারবে না। ভোট কারচুপির কথা বলতে পারবে না। বিএনপি আর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার পুরনো অভিযোগ আনতে পারবে না। এ কারণেই বিএনপি ইভিএম চায় না।

শরিকদের ৬৫-৭০টি আসন দেওয়ার চিন্তা : এ সময় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নিজেদের প্রস্তুতি ও আলোচনার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি আমরা নিতে শুরু করেছি। এ মাসেই আমাদের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করব। জোট নিয়েও আমরা পরোক্ষভাবে আলাপ-আলোচনা করেছি। যারা আমাদের এত দিনের শরিক তাদের বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। অনেকে আসতে চাচ্ছে, তাদের সঙ্গেও আমরা কথাবার্তা বলতে শুরু করেছি। তিনি বলেন, আমাদের জোটে আলাপ-আলোচনা চলছে, এ মাসের শেষ দিকে ফাইনাল শেপ নেবে। বেশিদূর গেলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যেতে পারে। আমাদের জোটের জন্য ৬৫ থেকে ৭০ সিট ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা আছে। এখানেও কথা আছে, এটা কোনো বাইন্ডিং বিষয় না। ভালো প্রার্থী হলে আমরা এক্সসেপ্ট করব। উইনেবল প্রার্থীকে আমরা মনোনয়ন দেব। এলায়েন্সের যে কোনো দলেরই হোক আমরা তাদের এক্সসেপ্ট করব। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।

 আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর