ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আয় ৩১ লাখ টাকা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আয় ১১ লাখ টাকা। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তারা যে হলফনামা দিয়েছেন, তা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, উপহার হিসেবে পাওয়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন ওবায়দুল কাদের; আর স্ত্রীর উপহারের গাড়িতে চড়েন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০০৮ সালের হলফনামায় মির্জা ফখরুল নিজের কোনো গাড়ির কথা উল্লেখ না করলেও এবার স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার পাওয়া একটি গাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতায় ওবায়দুল কাদের বিএ অনার্স লিখেছেন; পেশায় তিনি লিখেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী (বর্তমানে এমপি ও মন্ত্রী হিসেবে বেতন-ভাতা পাই এবং বই ও পত্র-পত্রিকায় লিখে আয় করি)। আর ফখরুলের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ; পেশা হিসেবে তিনি লিখেছেন ব্যবসা ও পরামর্শক। ওবায়দুল কাদের এবার নোয়াখালী-৫ আসন আর ফখরুল ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে ভোট করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর বাইরে মির্জা ফখরুল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একটি আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরের হলফনামা : নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তার বার্ষিক আয়ের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন—বাড়ি ভাড়া/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে আয় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার, চাকরি ও লেখালেখি থেকে আয় ১২ লাখ ৬০ হাজার, বই লিখে আয় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫১ টাকা। সব মিলিয়ে আয় ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৬৫১ টাকা। তার স্ত্রী বাড়ি ভাড়া/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে বছরে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৪৩৬ টাকা, ব্যবসা থেকে তিন লাখ ৯৩ হাজার ২৬০ টাকা, অন্যান্য খাত থেকে তিন লাখ ৯৬ হাজার ৫১৯ টাকা আয় করেন বলে হলফনামায় বলা হয়েছে। অস্থাবর সম্পদ : নিজের নগদ আছে ৫৫ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৮৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪২ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ এক কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ২৭৮ টাকা। ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন কাদের। আর এক লাখ ৫০ হাজার টাকার ২৫ তোলা স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। এ ছাড়া নিজের নামে আট লাখ ৭৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে। আর ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর হাতে আছে নগদ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬১১ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৫৫ লাখ ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা এবং এক লাখ টাকা মূল্যের ২০ তোলা স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। এ ছাড়া তার ১২ হাজার টাকা দামের ফোন এবং এক লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। স্থাবর সম্পদ : উত্তরায় ৫০ লাখ ৭৯ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের অকৃষি জমি এবং পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে ৬০ শতাংশ অকৃষি জমি রয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের নিজস্ব কোনো বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট নেই। তার স্ত্রীর ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের এক হাজার ৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে বলে হলফনামায় জানিয়েছেন কাদের। মির্জা ফখরুলের হলফনামা : বিএনপি মহাসচিবের বিরুদ্ধে অন্তত ৪৫টি মামলার তথ্য মিলেছে হলফনামায়। এর মধ্যে মোট নয়টি মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন। আর একটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পর নথিজাত করা হয়েছে। মির্জা ফখরুলের আয় ১১ লাখ ৩১ হাজার ৪৩৩ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আসে ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা। বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ ফখরুলের কোনো আয় না থাকলেও এ খাতে তার স্ত্রী বছরে আয় করেন চার লাখ ২৬ হাজার ৯৮৮ টাকা। বিএনপি মহাসচিব ব্যবসা থেকে আয় করেন এক লাখ ২৫ হাজার ৯৭৪ টাকা; শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত এক লাখ ৪১ হাজার ১৮১ টাকা। তার স্ত্রী শেয়ার থেকে ৮৪ হাজার ৮৯৫ টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে বছরে আয় করেন ২০ লাখ টাকা। পেশা থেকে বছরে আয় করেন ৬ লাখ টাকা। চাকরি করে বছরে সম্মানী ভাতা পান এক লাখ ৬২ হাজার টাকা। তার স্ত্রী চাকরি থেকে বছরে আয় করেন চার লাখ ৪৫ হাজার ৫৪০ টাকা। তিনি বছরে ব্যাংক সুদ পান ২ হাজার ৮০৫ টাকা। তার স্ত্রী ব্যাংক সুদ থেকে ২৬ হাজার ৯০৭ টাকা এবং ডিপিএস থেকে পান ১১ লাখ ১৯ হাজার ৩৮৮ টাকা। অস্থাবর সম্পদ : নগদ টাকা আছে ৪২ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৫ টাকা। তার স্ত্রীর আছে ৫ হাজার ৩১২ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা এক লাখ ৪৩ হাজার ১৮১ টাকা। তার স্ত্রীর আছে ২১ লাখ ৭২ হাজার ৮৭০ টাকা। দি মির্জাস প্রা. লিমিটেডে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার শেয়ার আছে ৬৫৮টি। নিজের নামে ফখরুলের সঞ্চয়পত্র না থাকলেও স্ত্রীর নামে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আছে। স্ত্রীর কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি প্রাইভেটকার আছে। তার স্ত্রীর ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ১৪০ টাকার একটি গাড়ি আছে। আছে ১০ ভরি সোনা, যা বিয়ের সময় দান হিসেবে পেয়েছেন। তার স্ত্রীর দুই লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। ফখরুলের এক লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি টিভি, দুটি ফ্রিজ, একটি এসি, দুটি ডেকসেট আছে। তার স্ত্রীর এক লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী আছে। এ ছাড়া এক লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের খাট, সোফা সেট ও ডাইনিং টেবিল আছে ফখরুলের। তার স্ত্রীর এক লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। স্থাবর সম্পদ : মির্জা ফখরুলের অর্জনকালীন মূল্যের ৬০ হাজার টাকার ৫ একর কৃষি এবং ৫ লাখ টাকার ৪ শতক অকৃষি জমি আছে। তার স্ত্রীর আছে অর্জনকালীন মূল্যের ৫০ হাজার টাকার কৃষি এবং ৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকার ৫ কাঠা অকৃষি জমি। অর্জনকালীন ১০ লাখ টাকার দোতলা বাসার একাংশ আছে ফখরুলের। নিজের কোনো অ্যাপার্টমেন্ট না থাকলেও তার স্ত্রীর ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট আছে। আর দোকানের অগ্রিম বাবদ তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা দেনা রয়েছে ফখরুলের। এদিকে গত ১০ বছরে মির্জা ফখরুলের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ প্রায় আড়াই গুণ বেড়েছে বলে হলফনামায় দেখা গেছে। সম্পদ বেড়ে যাওয়ায় স্বামীর চেয়েও বেশি সম্পদশালী হয়েছেন স্ত্রী। ২০০৮ সালের হলফনামায় স্ত্রী রাহাত আরার অস্থাবর সম্পত্তি দেখানো হয়েছিল ২৩ লাখ ২২ হাজার ২৩২ টাকার। এবার দেখানো হয়েছে ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩২২ টাকা। ২০০৮ সালে মির্জা ফখরুলের অস্থাবর সম্পদ ছিল ৩৯ লাখ ৭ হাজার ১৯০ টাকার। এবার দেখানো হয়েছে ৪৪ লাখ ৬১ হাজার ৪৪৫ হাজার টাকা।
শিরোনাম
- বিমানবন্দর এলাকার দুই জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ
- বাসে আগুন দিয়ে করছিলেন ভিডিও, ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু
- ইমাম প্রশিক্ষণে সৌদি সরকারের সহায়তার আশ্বাস
- শাকসু নির্বাচন বানচালের অভিযোগে প্রশাসনিক ভবনে তালা
- নওগাঁয় বিএনপিতে যোগ দিল আরও ৭ শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার
- প্রশাসন নিশ্চুপ থাকলে বিপদ আরও বাড়বে : গয়েশ্বর
- নতুন দুই দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন
- চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের
- আরও ২৩ জেলায় নতুন ডিসি, চার বিভাগে কমিশনার
- ব্যাচেলর পয়েন্টের নতুন চমক স্পর্শিয়া
- শেষ মুহূর্তে গোল হজমে জেতা ম্যাচ ড্র করলো বাংলাদেশ
- সাজা শেষে ৭২ প্রবাসীকে দেশে পাঠাল মালয়েশিয়াস্থ হাইকমিশন
- উচ্চকক্ষে পিআর, সংসদের প্রথম ১৮০ দিনে সংবিধান সংশোধন
- আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর গণভোট বিষয়ে সিদ্ধান্ত : সিইসি
- সাঈদ খোকন ও তার বোনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার অনুমোদন
- ‘নির্বাচনের দিন গণভোটের ঘোষণায় আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পথ রুদ্ধ’
- ২৩ নভেম্বর বিপিএলের নিলাম
- মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ডিকেবিএ’র ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
- ঢাকা ওয়াসার এমডি হলেন আব্দুস সালাম ব্যাপারী
- ২০২৪ সালে যক্ষ্মায় মারা গেছে ১২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা