মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

এবার প্রতীকের লড়াই

নৌকা, ধানের শীষ ছাড়াও আছে এরশাদের লাঙ্গল, মঞ্জুর বাইসাইকেল, অলির ছাতা মার্কা

গোলাম রাব্বানী

এবার প্রতীকের লড়াই

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। গতকাল প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। ফলে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। এবার মোট প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৪১ জনে। এরমধ্যে ১ হাজার ৭৪৫ জন বিভিন্ন দল মনোনীত ও ৯৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। অর্থাৎ প্রতি আসনে প্রার্থী থাকছেন গড়ে ৬ জনের বেশি। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এবারের ভোটের লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে ৩০০ আসনের মধ্যে দলটির নিজস্ব প্রার্থী রয়েছেন ২৬০ আসনে। আর জোটের শরিকরা ১৩ আসনে নৌকা, ২ আসনে বাইসাইকেল ও ২৫ আসনে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট করবে। সব মিলিয়ে এখন নৌকার মাঝি ২৭৩ জন। এদিকে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৪২টিতে বিএনপির নিজ প্রার্থী রয়েছেন। আর ধানের শীষ প্রতীকে মোট ২৯৮ জন ভোট করবেন। ২০-দলীয় জোট শরিকদের মধ্যে নিবন্ধনহীন জামায়াতে ইসলামীকে ২২টি আসন ছেড়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তালিকায় তাদের দলের নাম বিএনপি লেখা হয়েছে। জোটের শরিকরা ৩৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে এবং চট্টগ্রাম-১৪ আসনের প্রার্থীর প্রতীক ছাতা ও কক্সবাজার-২ আসনে এক জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে লড়বেন। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী রয়েছেন ১৭৩ জন।

নৌকার প্রার্থী ২৭৩ জন, আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী ২৬০ জন : তরিকত ফেডারেশনকে একটি আসনে নৌকা প্রতীকে ভোট করার সম্মতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। রবিবার প্রার্থিতা চূড়ান্তের শেষ দিনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ‘জোটবদ্ধ প্রার্থী ও প্রতীক’ নিয়ে সংশোধিত পত্র দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, মুদ্রণজনিত ভুলের কারণে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খানকে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী উল্লেখ করা হয়েছিল। টাঙ্গাইল-৫ আসনে ছানোয়ার হোসেনকে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২৬০ আসনে আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জোটের শরিকদের মধ্যে বাইসাইকেল প্রতীকে পিরোজপুর-২ আসনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনে রুহুল আমিন ভোট করবেন। আর ওয়ার্কার্স পার্টির ৫, জাসদের ৩, তরিকত ফেডারেশনের ১, বাংলাদেশ জাসদের ১ ও বিকল্পধারার তিনজন নৌকা প্রতীকে ভোট করবেন। এখন নৌকার প্রার্থী ২৭৩ জন। ২৭টি আসনে নৌকার প্রার্থী নেই। সেখানে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি-জেপির দুজন এবং জাতীয় পার্টির ২৫ জন নিজেদের প্রতীকে ভোট করতে পারবেন।

শেষ মুহূর্তে ৯ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করল বিএনপি : রবিবার শেষ মুহূর্তে বিএনপি ৯ আসনের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৪২টিতে বিএনপি নিজ দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছে। ২০-দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে নিবন্ধনহীন জামায়াতে ইসলামীকে ২২টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়। এর বাইরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামকে ৭টি, জেএসডিকে ৪টি, নাগরিক ঐক্যকে ৪টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে ৪টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত শরিক দলগুলো ১৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ধানের শীষ প্রতীকে। ২০-দলীয় জোট শরিকদের মধ্যে এলডিপিকে ৫টি, খেলাফত মজলিশকে ২টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ৩টি, জাতীয় পার্টিকে (কাজী জাফর) ২টি, বিজেপিকে ১টি, কল্যাণ পার্টিকে ১টি, এনপিপিকে ১টি, লেবার পার্টিকে ১টি, পিপিবিকে ১টি আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। অর্থাৎ বিএনপির ২০-দলীয় জোটের এই শরিকরা ১৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এদের মধ্যে এলডিপির চার নেতা ধানের শীষ প্রতীক নিলেও দলটির চেয়ারম্যান অলি আহমদ চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ভোট করবেন নিজের দলের প্রতীকে। এ ছাড়া কক্সবাজার-২ আসনে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদ স্বতন্ত্র লড়বেন।

নৌকায় তিনজন, মশালে চারজন জাসদের : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের তিনজন নৌকায় ভোট করছেন। পাশাপাশি মশাল প্রতীকে ভোট করছেন চারজন। নির্বাচনে ১৪-দলীয় জোটের শরিক হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের তিনজন। তারা হলেন— কুষ্টিয়া-২ আসনে হাসানুল হক ইনু, ফেনী-১ আসনে শিরিন আখতার ও বগুড়া-৪ আসনে এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন। জাসদের প্রতীক মশালে ভোট করবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে শাহ জিকরুল আহমেদ, গাইবান্ধা-৩ আসন থেকে এস এম খাদিমুল ইসলাম খুদি, রংপুর-২ আসন থেকে কুমারেশ চন্দ্র রায় এবং বরিশাল-৬ আসনে মো. মোহসিন। এ ছাড়া বাসদ ৪৫ আসনে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি ৭৪ আসন এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২৮ আসনে ভোট করছে। সংসদ নির্বাচনে এককভাবে ২৯৮ আসনে লড়বে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর