রবিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
সিপিডির পর্যবেক্ষণ

ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়ার কারণেই শ্রমিক অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রধান রপ্তানিখাত তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের সাম্প্রতিক অসন্তোষের প্রধান কারণ হিসেবে মজুরি কাঠামো নির্ধারণে ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়াকে চিহ্নিত করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। এর সঙ্গে শ্রমিকদের কাছে মজুরি বাড়ার সঠিক তথ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রেও ঘাটতি খুঁজে পেয়েছে সিপিডি।

গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘পোশাক খাতে সাম্প্রতিক মজুরি বিতর্ক : কী শিখলাম?’ শীর্ষক সংলাপে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সংস্থাটি। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে কিছু সুপারিশও তুলে ধরেছে সিপিডি। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে এতে সঞ্চালক ছিলেন সিপিডির বিশেষ  ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, শহিদুল আজিম, মুমীনুর রহমান, শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ, বাবুল আকতার, কাজী রুহুল আমিন, নুরুল ইসলাম। সংলাপে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সিপিডি বলেছে, নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার আগে ও পরের বিভিন্ন ধাপের কাজে ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়া অবলম্বন করায় শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। মজুরি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গ্রেডভিত্তিক তারতম্য সৃষ্টি হওয়ায় শ্রমিকদের মাঝে অঞ্চল ও গ্রেডভেদে মিশ্র উপলব্ধির জন্ম দেয়। নতুন মজুরি সম্পর্কে শ্রমিকদের পূর্ব ধারণা দেওয়ার কোনো উদ্যোগ অধিকাংশ মালিকই নেননি। আবার একেক কারখানায় একেকভাবে মজুরি বাস্তবায়ন ঘটেছে, অনেক কারখানা নতুন কাঠামো অনুসরণ করে মজুরি বাড়ায়নি। সিপিডির সুপারিশে বলা হয়- মজুরির পরিবর্তন বিষয়ে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। ভবিষ্যতে মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগের সময় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আরও বেশি মতবিনিময় করতে হবে। নারী শ্রমিকদের তাদের গ্রেড, মজুরি ও অন্যান্য আর্থিক ইস্যুগুলো আরও ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত। শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে আরও কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা।  মজুরি আন্দোলনের পর শ্রমিকদের নতুন করে হয়রানি থেকে বিরত থাকা। বিশেষ করে বায়োমেট্রিক ডাটাবেজে কাউকে নেতিবাচক তালিকায় পাঠানোর আগে ত্রিপক্ষীয় কমিটি দিয়ে পর্যালোচনা করা উচিত। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সিপিডির সুপারিশগুলোর প্রশংসা করে বলেন, ভবিষ্যতে এই সুপারিশ একটি ‘গাইডলাইন’ হিসেবে ভূমিকা রাখবে। মালিকপক্ষকেও গড়িমসি না করে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২/১ জন মালিকের জন্য যেন এই সেক্টরের বদনাম না হয়। যারা কারখানার ভিতরে ঝামেলা করেছে, তাদের যেন ধরা হয়। কারণ শত শত শ্রমিক যেখানে বিক্ষোভ করেছে, সেখানে দু-চারজন কারখানার কাচে ঢিল ছুড়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন মজুরি কাঠামোয় গ্রেডের সংখ্যা কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব দেন। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাক শিল্পে সরকার প্রণোদনা বাড়ানোর কথাটিও সঠিক নয়।

সর্বশেষ খবর