শুক্রবার, ২৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

লন্ডনে চালকবিহীন ডিএলআর

লন্ডনে চালকবিহীন ডিএলআর

ঘোষণার পর সময়মতোই প্লাটফর্মে এসে দাঁড়াচ্ছে ট্রেন। একটুও এদিক-সেদিক হচ্ছে না। ছোট্ট ট্রেন। তাই ভিড় একটু বেশিই। প্রথম দেখায় বিস্ময় জাগবে মনে। ট্রেনের চার পাশে কাচ থাকায় এক নজরেই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখা যায়। কিন্তু ইঞ্জিন কোথায়! আর চালকই বা কোথায়! আসলে এই ট্রেনে কোনো চালক নেই।

বলা হচ্ছে ডিএলআরের কথা! লন্ডনের চালকবিহীন ট্রেন। এই ট্রেন চলে কম্পিউটার প্রোগামিংয়ের মাধ্যমে। তাই আলাদা কোনো ড্রাইভারের প্রয়োজন হয় না। প্রথম থেকে শেষ, প্রতিটি বগীতেই যাত্রীরা ওঠানামা করেন।

ডিএলআরের সম্প্রসারিত রূপ হচ্ছে ‘ডকল্যান্ডস লাইট রেলওয়ে’। পূর্ব লন্ডনের জনপ্রিয় মেট্রো সার্ভিস। দেখতে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেনের মতোই। লন্ডনে এই মেট্রো সার্ভিস চালু হয় ১৯৮৭ সালে। পূর্ব লন্ডনের ৭টি লাইনে প্রতিদিন ৪৫টি ট্রেন যাওয়া-আসা করে। ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে।

পূর্ব লন্ডন হচ্ছে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা। উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাঙালিরা প্রথম এই এলাকাতে এসে ওঠে। সেন্ট্রাল লন্ডনের মতো এখানে দ্রুত উন্নয়ন লাগেনি। এক সময় লন্ডনের মানুষ ডকল্যান্ডসকে লন্ডনের বাইরের অংশ মনে করত। কিন্তু ডিএলআর চালু হওয়ার পর বদলে গেছে সব কিছু।

পূর্ব লন্ডনের ক্যানিং টাউনে দেখা হয় বাংলাদেশি বংশো™ভূত ইয়াকুব আলীর সঙ্গে। বয়স ৮০ পেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার বেশ আগে তিনি লন্ডনে এসেছেন। ওয়েস্টহ্যামে বাড়ি আছে তার। ডিএলআর সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘এই এলাকা আগে ততটা নিরাপদ ছিল না। ব্রিটিশরা এদিকে খুব কম আসত। কিন্তু আমরা বাঙালিরা অধিকাংশ এখানেই থাকতাম। চোখের সামনে এলাকাটা বদলে গেল। ডিএলআর আসার পরই পূর্ব লন্ডনে উন্নতির ছোঁয়া লাগে।’

বাংলাদেশিদের জন্য খুশির খবর হচ্ছে, ঢাকায় যে মেট্রো রেলের কাজ শুরু হয়েছে তা কিন্তু এই ডিএলআরের আদলেই করা। পার্থক্য কেবল একুটুই থাকবে যে, এখানে ট্রেনে কোনো চালক নেই, ঢাকার মেট্রোতে চালক থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর