শিরোনাম
রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ছুটির দিনে ব্যস্ত সময় কাটালেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও গতকাল কর্মব্যস্ত সময় কাটালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পরিবহন, স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ ডজনখানেক মন্ত্রী-নেতার সঙ্গে বৈঠক করে নানা দিকনির্দেশনা দেন তিনি। গতকাল গণভবনে এই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টারা এলে প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পাশাপাশি দলের বেশ কয়েকজন নেতাকে নিয়েও বৈঠক করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ছুটির দিনেও অত্যন্ত কর্মব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সকাল ১০টায় গণভবনের অফিস কক্ষে আসেন। বেলা ৩টা পর্যন্ত তিনি অফিস করেন।’ এই সময় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। ঈদের এই সময়ে সড়ক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে মন্ত্রীর কাছ থেকে খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী এবং ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন ও সহজ করতে মন্ত্রীকে নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সম্প্রতি ভারত সফর থেকে ফেরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার সফরের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ঈদ জামাত, কোরবানি যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক থাকে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেন। সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের সার্বিক বিষয়ে মন্ত্রীকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাহারা খাতুন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, অসীম কুমার উকিল প্রমুখ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় তিন সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। ইউরোপে বাংলাদেশের দূতদের নিয়ে ২০ জুলাই সেখানে একটি সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। লন্ডনে কমনওয়েলথ মহাসচিব পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড এবং লর্ড আহমেদ অব উইম্বলডন আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২২ জুলাই লন্ডনের একটি হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর বাঁ চোখে সফল অস্ত্রোপচার হয়।

ডেঙ্গু পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী :  ডেঙ্গু পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ঢাকার দুই মেয়র এবং স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের তিনি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা যেন বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পায় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতা বাড়াতে জোর দিয়েছেন তিনি। এ জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে সচেতনতা বাড়ানো ও ডেঙ্গু লার্ভা ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী। দলীয় প্রধানের নির্দেশের পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও সক্রিয় হয়েছেন।  গত ১৯ জুলাই লন্ডন যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় লন্ডন অবস্থান করেই খোঁজখবর নেন তিনি। গত ৩০ জুলাই টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকায় আওয়ামী লীগের বিশেষ জরুরি সভায় যোগ দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। গত ৮ আগস্ট লন্ডন সফর শেষে দেশে ফিরে গণভবনে পৌঁছেই দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ডেঙ্গুর সর্বশেষ খবর কী? ডেঙ্গু প্রতিরোধে কে কী ভূমিকা রেখেছেন?

গণভবনে উপস্থিত একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী গণভবনে পৌঁছে উপস্থিত নেতাদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটাকে আমাদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। আমরা সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। দলীয়ভাবে এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ডেঙ্গু মশা নির্মূলে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। প্রয়োজনে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একটা মহল বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে। তাই মানুষকে বোঝাতে হবে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটার প্রাদুর্ভাব বা প্রকোপ দেখা গেছে। তাই এটাকে আমাদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই সিরিয়াস। তিনি ডেঙ্গু রোধে সর্বাত্মক গুরুত্ব দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। ডেঙ্গু রোগীর বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিজেই কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী।’ তিনি বলেন, ‘লন্ডন সফর শেষে দেশে ফিরেই প্রধানমন্ত্রী নেতা-কর্মীদের কাছে ডেঙ্গুর সর্বশেষ খবর জানতে চান এবং সচেতনতা বাড়ানো এবং ডেঙ্গুর লার্ভা ধ্বংসের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর