বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে এখনো প্রতি চারজনে একজন মানুষ দরিদ্র। শুধু তাই নয়, সংস্থাটি এও বলছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যত দ্রুত হচ্ছে তত গতিতে দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে না। এ ছাড়া উত্তরের জেলাগুলোয় সাম্প্রতিক সময়ে দারিদ্র্যের হার কমেনি বরং বেড়েছে। আর ঢাকা ও সিলেটে দারিদ্র্যের হার কমছে দ্রুত গতিতে। তবে গত এক দশক দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ বেশ ভালো করেছে। ২০১০ থেকে ২০১৬ সময়ে ৮০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে বেরিয়ে এসেছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ প্রোভার্টি অ্যাসেসমেন্ট শীর্ষক প্রকাশিত এক রিপোর্টে এসব তথ্য উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি-প্রধান মার্সি টেম্বন বলেন, বিগত দশকে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে। তবে দেশটিতে এখনো প্রায় ৪ কোটি মানুষ দরিদ্র। শহর এলাকায় দারিদ্র্য মোকাবিলায় সরকারকে আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মার্সি। কেননা ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ শহরে বাস করবে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, জোরালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের দারিদ্র্য কমাচ্ছে। তবে তুলনামূলক কম গতিতে। দারিদ্র্য বিমোচনের ৯০ শতাংশই গ্রামে হয়েছে। শহরে দারিদ্র্য কমেছে সীমিত হারে। এ ছাড়া অতিদারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে শহরের লোকের সংখ্যা একই রয়েছে। কৃষি নয়, গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য কমাতে শিল্প ও সেবা খাত অবদান রেখেছে। আলোচ্য সময়ে কৃষির প্রবৃদ্ধি ধীর ছিল এবং সবচেয়ে কম দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রেখেছে। অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, যারা দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তারা আবার নানা কারণে দারিদ্র্যের দিকে ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। ফলে এসব দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ মারিয়া ইউজেনিয়া জেননি প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বলেন, ২০১০-১৬ সময়ে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক উন্নতি করেছে। বিশেষ করে শ্রমিকের আয় বৃদ্ধি এ উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ৮০ লাখ মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে।