সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোনো বিকল্প নেই

বিশ্বব্যাংক, চীন, জাপান, ভারতের সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী

মানিক মুনতাসির (ওয়াশিংটন) যুক্তরাষ্ট্র থেকে

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই বলে মনে করে সরকার। এজন্য যে কোনো উপায়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের ফেরত পাঠাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্র্থীবিষয়ক এক গোলটেবিল আলোচনা শেষে অর্থমন্ত্রী এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

মুস্তফা কামাল আরও বলেন, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও এখন তার উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে। এদের জন্য কক্সবাজারসহ ওই এলাকার পুরো পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এতে ওই এলাকার সামাজিক পরিবেশও হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের সামাজিক বন্ধনসহ যেসব ক্ষতি হচ্ছে তা ডলার বা টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তাই রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যাবে এটাই আমাদের প্রধান চাওয়া। ওই গোলটেবিল বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী। এজন্য বিশ্বব্যাংক বা অন্য কোনো উন্নয়ন সহযোগীর এ খাতে আর্থিক সহায়তার বিষয়টি আমরা ভাবছি না। ফলে আমরা ভাবছি তাদের দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ছাড়া  কোনো বিকল্প নেই। আশা করি বিশ্বব্যাংক সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমাদেরকে একটা সুন্দর সমাধানের পথ দেখাবে। এ বিষয়ে বিশ্বের সবাই আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে। এতে চীন, ভারত ও জাপান প্রত্যেকে একেকটি বড় ফ্যাক্টর। ফলে এদেরকে বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না। তারা সব কিছু আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, কোনো প্রকল্পে অর্থায়ন বা অনুদান নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমরা কোনো কথা আগে বলিনি, এবারও বলিনি। এটা বিশ্বব্যাংক নিজেরাই করে থাকে। আর্থিক খাতে আমাদের কোনো চ্যালেঞ্জ ঝুঁকি রয়েছে কিনা সেগুলো মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন বিশ্বে এখন বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে। এতে পৃথিবীর অনেক দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সভায় বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে প্রত্যেকে ইতিবাচক বক্তব্য তুলে ধরেছেন। এবারের সভায় এটাই বড় অর্জন। তবে বাণিজ্য যুদ্ধ আর্থিক খাতের জন্য একদিকে চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে সুযোগ। আামদের এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে হবে। এ ছাড়া এদিন অর্থমন্ত্রী সিটি ব্যাংক ও এইচএসবিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুঁজিবাজার ও বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় বিশ্বের দুটি শীর্ষস্থানীয় সিটি ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ও এইচএসবিসি ব্যাংক। এই সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব আলাদাভাবে বিশ্বব্যাংকের সভায় অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৈদেশিক উৎস থেকে নেওয়া ঋণগুলো এখন থেকে টাকায় পরিশোধের জন্য প্রস্তাব এসেছে। এক্ষেত্রে এই দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করার প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। তবে এই ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কেননা ডলারের বিপরীতে টাকার মান সব সময় ওঠানামা করে। এক্ষেত্রে টাকার মূল্যমান নির্দিষ্ট রেখে ডলারের বিপরীতে নেওয়া ঋণ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করা হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর