শিরোনাম
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

আর কাউকে ফেরত আনা হবে না

চীনে বাংলাদেশি কেউ আক্রান্ত নয়, ৫৬৩ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। সর্বশেষ বুধবার ৫৬৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে চীন। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে গতকাল ঢাকায় চীনা দূতাবাস সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, চীনে অবস্থানরত কোনো বাংলাদেশি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হননি। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীন থেকে আর কাউকে ফেরত আনা হবে না। চীন থেকে বাংলাদেশে আসাও নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এর আগে চীনা নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত চীনা নাগরিকদের ছুটি শেষে ফিরে আসার ভিসা দেওয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে বর্তমানে একজনও করোনাভাইরাস রোগী নেই। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের স্বাস্থ্য খাত পূর্ণ সজাগ। ইতিমধ্যে দেশের সব নৌ, স্থল ও বিমানবন্দরে প্রয়োজনীয় স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের সব মানুষকে মাস্ক পরে বাইরে ঘোরার প্রয়োজন নেই। যাদের সর্দি-কাশি-জ্বর আছে শুধু তারাই মাস্ক ব্যবহার করবে। যাতে তাদের কাছ থেকে কোনো ছোঁয়াচে রোগ অন্যদের সংক্রমিত করতে না পারে। গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশি আক্রান্ত হননি : এদিকে গতকাল ঢাকায় চীনা দূতাবাসে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে থাকা চীনা দূতাবাস এবং উন্নয়ন প্রকল্প বা কোম্পানিতে কর্মরত আমাদের কোনো নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। একইভাবে গোটা চীনে অবস্থানরত কোনো বাংলাদেশিও এই ভাইরাসে সংক্রমিত হননি। তাই সবার প্রতি আহ্বান, সাধারণ নাগরিকরা সতর্ক থাকবেন, কিন্তু তারা যেন আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন, কোনো গুজবের শিকার যেন না হন। অপরদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গতকাল বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস এক নির্দেশনায় জানায়, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কর্মরত চীনের কোম্পানিগুলো যেন স্বদেশ (চীন) থেকে কর্মী নিয়োগে বিরত থাকে। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনের নাগরিকরা যেন আপাতত স্বদেশে (চীন) ভ্রমণ না করেন। মৃত্যু সাড়ে ৫০০ ছাড়াল : এদিকে চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৫০০ ছাড়িয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২৮ হাজার। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার আরও ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাতে চীনের মূল ভূখন্ডেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬৩ জনে।

 অধিকাংশ মৃত্যু ও নতুন সংক্রমণের ঘটনাই ঘটেছে হুবেই প্রদেশে, যে প্রদেশের উহান শহরকে এ ভাইরাসের ‘উৎসস্থল’ বলা হচ্ছে।

ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে চীনের বেশ কয়েকটি শহর অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক হাজার লোককে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে। প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল বলে বিবেচিত হুবেই প্রদেশে ভাইরাসটিতে বুধবার আরও ৭০ জনের মৃত্যু হয় এবং নতুন করে ২ হাজার ৯৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত ও নতুন করে আক্রান্তের যে সংখ্যা চীনের কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে তার ৮০ শতাংশেরও বেশি এ প্রদেশটিতে ঘটেছে। ট্রেন স্টেশন ও বিমানবন্দরের পাশাপাশি রাস্তাগুলোও বন্ধ করে দেওয়ায় চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছে। প্রথমে এই প্রদেশেই ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছিল। প্রাদেশিক রাজধানী উহানের একটি সিফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি বলে মনে করা হয়। চীনের মূল ভূখন্ডের বাইরে এ পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে ফিলিপিনসে এবং চীন শাসিত হংকংয়ে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। দুজনেই উহান থেকে ঘুরে আসার পর আক্রান্ত হন।

পেট্রাপোল সীমান্তে ‘হেল্পডেস্ক’ : কলকাতা প্রতিনিধি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে মেডিকেল টিম মোতায়েন করেছে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর, খোলা হয়েছে হেল্পডেস্ক। গতকাল সকালে ওই স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিটি পর্যটককে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাদের শরীরে এই চিনা ভাইরাসের জীবাণু আছে কিনা। এরপরই তাদের ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর