মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের রায়

১৩ ক্লাবসহ সারা দেশে জুয়া নিষিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অভিজাত ১৩ ক্লাবসহ সারা দেশে সব ধরনের জুয়া খেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে হাই কোর্ট। পাশাপাশি দেশের কোথাও জুয়ার উপকরণ পাওয়া গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তা জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবীর করা এক রিট আবেদনে চার বছর আগে হাই কোর্টের জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গতকাল বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। সাজা বৃদ্ধি করে আইন সংশোধন করা জরুরি বলেও রায়ে বলেছে হাই কোর্ট। অভিজাত ১৩ ক্লাব হলো- ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, ধানমন্ডি ক্লাব, বনানী ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাং সিনিয়রস ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, সিলেট ক্লাব ও খুলনা ক্লাব। আদালতে ঢাকা ক্লাবের পক্ষে রুল শুনানি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আর রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রেদওয়ান আহমেদ রানজিব। রায়ে বলা হয়, যেসব খেলার ফলাফল দক্ষতার বদলে ‘চান্স’ বা ভাগ্য দিয়ে নির্ধারিত হয়, সেগুলোই জুয়া খেলা। আদালত বলেছে, হাউজি, ডাইস, ওয়ান টেন-এর মতো খেলাগুলো দক্ষতার পরিবর্তে ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। আইনে এসব খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

 প্রচলিত আইনে সাজা কম থাকার বিষয়ে রায়ে আদালত বলেছে, ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনে ঢাকা মহানগরীর বাইরে জুয়া খেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এই আইনে সাজার পরিমাণ খুবই নগণ্য। মাত্র দুইশ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের কারাদন্ড। উপরন্তু ঢাকা মহানগরীর ভিতরে জুয়া খেললে এই আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জুয়া ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, সরকার ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে। আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, এই অভিযানের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্যাসিনো ও জুয়া খেলাকে নিরুৎসাহিত করা। কিন্তু অভিযানের পাশাপাশি জুয়া ও ক্যাসিনো বন্ধে আইনে সাজা বাড়ানোও জরুরি। পর্যবেক্ষণে আদালত বলে, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জুয়া আইন বৈষম্যমূলক। কারণ সংবিধানেই বলা হয়েছে আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। অপরাধ অপরাধই। এখানে ধনী-গরিবের বৈষম্যের সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর