শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাকা-লন্ডন বাদে আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-লন্ডন বাদে আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। করোনাভাইরাসের কারণে যে ১৫টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রেখেছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, সেগুলোর সময়সীমা আরও কিছুদিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রায় যাত্রীশূন্য হয়ে গেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

বিমানসূত্র জানান, সৌদি আরবের জেদ্দা, মদিনা, রিয়াদ, দাম্মাম, কুয়েতের কুয়েত সিটি, কাতারের দোহা, ওমানের মাসকাট ও থাইল্যান্ডের ব্যাংকক রুটের ফ্লাইট ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ৭ এপ্রিল পর্যন্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি, ৯ এপ্রিল দুবাই, ১২ এপ্রিল নেপালের কাঠমান্ডু, ভারতের কলকাতা ও দিল্লি ১৫ এপ্রিল, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর ১৪ এপ্রিল ও সিঙ্গাপুরে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সব ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ থাকবে। ঢাকা-লন্ডন-সিলেট-ঢাকা ও ঢাকা-ম্যানচেস্টার-সিলেট-ঢাকা রুটের ফ্লাইট দুটি চালু রয়েছে। জানা গেছে, বিমান প্রতি সপ্তাহে ১৭টি আন্তর্জাতিক রুটে ২১৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করত। করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ও ম্যানচেস্টারে সপ্তাহে ১৪টি ফ্লাইট চলছে বিমানের। করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করেছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এজন্য বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও বন্ধ হয়ে গেছে। বিমানের এমডি ও সিউও মোকাব্বির হোসেন বলেন, রুট ও আয় কমে যাওয়ায় বিমানের সব কর্মকর্তার ওভারটাইম ভাতা প্রদান বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে ষষ্ঠ থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাসহ ককপিট ও কেবিন ক্রুদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

 জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিমানের ক্ষতি হতে পারে ৪৭০ কোটি টাকার মতো। গত ২২ মার্চ বিমানের পরিচালক প্রশাসন এ-সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে। এদিকে ফ্লাইট সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিমানবন্দরে যাত্রী এখন প্রায় শূন্য। গত বুধবার সকাল থেকে গতকাল বিকাল পর্যন্ত দুই দিনে এ বিমানবন্দরে ৩৪টি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করেছে। এর মধ্যে অধিকাংশই ছিল কার্গো ফ্লাইট। অল্প কিছু যাত্রীবাহী ফ্লাইট এলেও সেগুলো ছিল প্রায় ফাঁকা। জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে চীন, যুক্তরাজ্য, হংকং ও থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে সরাসরি যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর দুই দিন পর মঙ্গলবার থেকে থাই এয়ারওয়েজও ঢাকা-ব্যাংকক রুটের ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়। বাকি তিনটি দেশের সঙ্গে অল্প কিছু ফ্লাইট চলাচল করলেও সেগুলোয় যাত্রীসংখ্যা বেশ কম থাকছে। চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের এম এ জি ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও এখন পুরোপুরি বন্ধ। শাহজালাল বিমানবন্দরসূত্রে জানা গেছে, ২২ মার্চ থেকে গতকাল ২৬ মার্চ সকাল পর্যন্ত পাঁচ দিনে ৫৪৮ জন যাত্রী ঢাকায় এসেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় এসেছেন মাত্র ৭৬ জন।

তবে বিশেষ ফ্লাইটে মালয়েশিয়া ও ভুটানে গেছেন ৩৬৪ জন। এরা সবাই ছিলেন ঢাকায় মালয়েশিয়া ও ভুটান দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী। বেবিচকের জনসংযোগ শাখা থেকে জানানো হয়, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের বিশেষ ফ্লাইটে গত বুধবার রাতে ঢাকা ছাড়েন ২২৫ জন মালয়েশিয়ান।

এরপর গতকাল সকালে ড্রুক এয়ারের দুটি বিশেষ ফ্লাইটে করে থিম্পু গেছেন ১৩৯ জন ভুটানি। এর মধ্যে ভুটান দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ভুটানের কিছু শিক্ষার্থী রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর