বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে অনুমতি লাগবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের অনুমতি ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না- এই মর্মে আইন সচিবকে একটি চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি কর্মচারীদের সরল বিশ্বাসে কৃত কাজের সুরক্ষা প্রদান সম্পর্কিত এবং বিচারিক  বা সরকারি দায়িত্ব পালনে কৃত বা এ মর্মে দাবিকৃত কাজের জন্য তাকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করে ফৌজদারি মামলা আমলে নেওয়ার আগে সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হবে। গত মঙ্গলবার এই চিঠিটি আইন সচিবকে দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একই সঙ্গে চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, সব সিনিয়র সচিব ও সচিব, বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আইন সচিবকে এই চিঠি দিল। চিঠিতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্বানুমতির বিষয়ে কয়েকটি আইন তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর সেকশন ১৯৭-এর সাবসেকশন (১) এর বিধান। জুডিশিয়াল অফিসার্স প্রটেকশন অ্যাক্ট, ১৮৫০-এর সেকশন-১ এবং মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এর ১৪ ধারা। এসব আইনে বলা আছে, বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট বা কোনো সরকারি কর্মকর্তার কর্তব্য/দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো কাজের জন্য পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো অপরাধ আমলে গ্রহণ করা যাবে না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আইনের শাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সৎ সাহস এবং প্রভাবমুক্ত মনন ও বিবেচনাবোধের মাধ্যমে যথাযথ সিদ্ধান্ত প্রদান ও দৃঢ়ভাবে তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উপরিউক্ত বিধানাবলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে বিভিন্ন জেলায় জেলা প্রশাসক/ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/কালেক্টরেট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি কর্মচারীদের সরকারি দায়িত্ব পালনে কৃত কাজের জন্য তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করে মামলা রুজু করা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণের আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা প্রতিপালন করা হচ্ছে না। এতে করে আইনের ব্যত্যয় ছাড়াও মাঠপর্যায়ে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ বা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রায়ই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে নদী, খাল-বিল, বন জলাশয়সহ সরকারি সম্পত্তি ও স্বার্থরক্ষা, অবৈধ ক্ষতিসাধন, জবর-দখল প্রতিরোধ ও উচ্ছেদ অভিযানে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।  চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, যে কোনো সরকারি কার্যক্রম বা সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আইনের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল দায়ের কিংবা প্রতিকার চেয়ে ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পারেন। কোনো কর্মচারী কর্তৃক আইনের গুরুতর অপপ্রয়োগ, এখতিয়ারবিহীন ক্ষমতা অনুশীলন কিংবা কোনো সিদ্ধান্তে মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হওয়ার ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উক্ত আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করতে পারেন। অন্যদিকে অধস্তন আদালতসমূহের এখতিয়ার এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেটি বারিত থাকবে তা আইন দ্বারা সুনির্দিষ্ট রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর