মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাসানী-বামপন্থিরা স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রগামী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভাসানী-বামপন্থিরা স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রগামী

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, মওলানা ভাসানী ও বামপন্থিরা এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূত্রপাতে অগ্রগামী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধেও বামপন্থিরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এখন ইতিহাসে বামপন্থিদের অস্বীকার কেবল নয়, অনেক ক্ষেত্রে অসত্য তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। রাজধানীর  ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার হলে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলার ঘোষণা’ দিবসের ৫১ বছর পূর্তিতে গতকাল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অস্বীকৃতি বন্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থিদের ভূমিকার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। বক্তব্য রাখেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক সামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সদস্য গৌতম দাস, ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরের সভাপতি কমরেড আবুল হোসাইন প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল হাসান মানিক। সভার শুরুতে সংগীত পরিবেশনা করেন ‘গণসাংস্কৃতিক মৈত্রী’র শিল্পীরা।

রাশেদ খান মেনন বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে এ দেশের বামপন্থিরা কেবল গুরুত্বপূর্ণ অবদানই রাখেননি, অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকাও পালন করেছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে বামপন্থিরাই আগুয়ান ভূমিকা রেখেছিলেন। সে সময় সামরিক শাসনের মধ্যেই ১৯৭০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলার প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছিলেন বামপন্থিরা। ওই সমাবেশের বক্তাদের ৭ বছর ও ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে মওলানা ভাসানী ও বামপন্থিদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার মধ্য দিয়েই সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব পালন স্বার্থক হয়ে উঠবে। আগামী প্রজন্ম জানবে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস।

জাতীয় সংসদে সম্প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ টেম্পারড করার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়ে পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে কে স্বাধীনতার সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কর্তন করল, কে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র বাদ দিল, ওয়ার্কার্স পার্টি তার জবাব চায়। আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও লক্ষ্য বাদ দিয়ে সামনে এগোনো যাবে না।’

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সদস্য গৌতম দাস বলেন, বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে সিপিএম প্রথম দাবি উত্থাপন করেছিল। কেবল দাবিই নয়, ধর্মঘট-হরতালও করেছে। ইন্দিরা গান্ধীর কাছে আমাদের পার্টি দাবি করে, বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এ সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশের শহীদদের অবদান এবং মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর