বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশে এখন কোনো রাজনীতি নেই। রাজনৈতিক নেতৃত্বও নেই। দেশটাকে নেতৃত্ববিহীন করে ফেলা হয়েছে। এর জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী। দেশটা এখন একটি বিশাল সমুদ্রে বৈঠাবিহীন নৌকার মতো। কোন কিনারে গিয়ে ভিড়বে নৌকা, তার নিশ্চয়তা নেই। তবে ঢেউয়ের আঘাতে যে কোনো সময় নৌকা ডুবে যেতে পারে।
গতকাল বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে সাবেক মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আলাপচারিতায় মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিশ্বের কোনো স্বৈরাচারী সরকার স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়েনি। এ সরকারও ছাড়বে না। তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। দলকে সুসংগঠিত করে রাজপথে নামতে হবে। কারামুক্ত করতে হবে গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। তাঁর মুক্তির জন্য এই সরকারের পতন জরুরি। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা আর ম্যাডামের মুক্তি- একসঙ্গে যায় না। অবিভক্ত ঢাকার সাবেক এই মেয়র বলেন, আজ বাংলাদেশে বিএনপির এমন কোনো নেতা-কর্মী নেই যার বিরুদ্ধে মামলা নেই। কেন এত মামলা, হত্যা-গুম? শুধু সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এসব করা হচ্ছে। কেউ আমাদের অধিকার দেবে না, অধিকার আদায় করতে হবে। দেশের জনগণ ফুঁসে উঠেছে। ইনশাআল্লাহ, এই জনগণের দাবির তোড়ে-আন্দোলনে এক দিন সব স্বৈরাচারী সরকারের মতো এই সরকারেরও পতন হবে। দলকে সুসংগঠিত করে ইনশাআল্লাহ অচিরেই আমরা মাঠে নামব। বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করব। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব। বিএনপির এই নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতা বলেন, দেশে এখন আওয়ামী লীগ নেই। সরকার পরিচালনায় তাদের হাত নেই। দেশ চালাচ্ছে অন্য কেউ। একটি স্বাধীন দেশের অস্তিত্বই প্রায় বিলীনের পথে। দেশে যদি নেতৃত্বই না থাকে তাহলে সে দেশ টিকে থাকতে পারে না। ডিজিটাল আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন দেশে যে দমনপীড়নের মহোৎসব চলছে তার একটি অস্ত্র হলো ডিজিটাল আইন। এই আইনের মাধ্যমে মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। এটা কোনো একসময় তাদের জন্যও বুমেরাং হয়ে যেতে পারে। বিএনপির রাজনীতি এখন কোন পথে? জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, নানা প্রতিকূল অবস্থার পরও বিএনপি নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। সাংগঠনিক অবস্থাও ভালো। দু-এক জায়গায় সমস্যা থাকতে পারে। বড় দলে এ ধরনের সমস্যা থাকে। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে বিএনপি কী করছে জানতে চাইলে মির্জা আব্বাস বলেন, অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য করে নেতা-কর্মীদের নিয়ে আমরা ম্যাডামের মুক্তির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম জিয়ার মুক্তি হবে। খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখন ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছি না। আমরা ভাবছি তাঁর শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে। ম্যাডামের উন্নত চিকিৎসা জরুরি। তিনি যেখানে চাইবেন, তাঁকে সেখানেই উন্নত চিকিৎসা দেওয়া উচিত।