শিরোনাম
শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
নিউইয়র্ক টাইমসে কলাম

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশই অনুপ্রেরণা বাইডেনের সামনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিশু দারিদ্র্য দূর করতে জো বাইডেন সম্প্রতি যে প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কতটা কাজে আসবে তার বর্ণনা দিতে গিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের বিখ্যাত কলামিস্ট নিকোলাস ক্রিস্টফ বাংলাদেশের দিকে তাকাতে বলেছেন। দুবার পুলিৎজার পুরস্কার জেতা এই সাংবাদিক বুধবার নিউইয়র্ক টাইমসের মতামত কলামে লিখেছেন, ‘৫০ বছর আগে গণহত্যা আর অনাহারের ভিতর বাংলাদেশের জন্ম। হেনরি কিসিঞ্জার দেশটিকে তলাবিহীন ঝুড়ির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।’ ‘১৯৯১ সালে একটি সাইক্লোনের সংবাদ কাভার করেছিলাম, তাতে বাংলাদেশের ১ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। তখন টাইমসে বাংলাদেশকে নিয়ে আমি হতাশার প্রতিবেদন করি।

বাংলাদেশ যত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে, তাতে মনে হচ্ছে আমি ঠিক ছিলাম। কিন্তু আমার হতাশাবাদ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কারণ তিন দশক ধরে দেশটি অবিশ্বাস্য উন্নতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।’ ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই মহামারীর চার বছর আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশ বেড়েছে। এটা চীনের থেকেও বেশি।’

নিকোলাস ক্রিস্টফ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশিদের আয়ু ৭২ বছর, যেটা যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশ একসময় হতাশাগ্রস্ত থাকলেও এখন বিশ্বকে যথেষ্ট শেখানোর আছে- কীভাবে উন্নতি করতে হয়।’ বাংলাদেশের এই সাফল্যের জন্য নিকোলাস ক্রিস্টফ শিক্ষা এবং নারী উন্নতিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘১৯৮০ সালের দিকে বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে। তখন  মেয়েরা খুব একটা শিক্ষার ছোঁয়া পায়নি।’ ‘কিন্তু সেই সময় সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা মেয়েদের যোগ করে শিক্ষার প্রসারে নজর দেয়। এখন বাংলাদেশে ৯৮ শতাংশ শিশু প্রাথমিক শিক্ষা পাচ্ছে। লিঙ্গ বৈষম্যের একটা  দেশে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো উচ্চমাধ্যমিকে ছেলেদের থেকে  মেয়েদের সংখ্যা বেশি।’ ‘বাংলাদেশ তাদের মেয়েদের শিক্ষিত করায় এখন তারাই অর্থনীতির পিলার।’ ‘সংক্ষেপে, বাংলাদেশ তার অপরিশোধিত সম্পদে বিনিয়োগ করেছে-তার গরিব এবং প্রান্তিক মানুষের ওপর। কারণ, এখান থেকেই সবচেয়ে বেশি সুফল আসত। এই একই বিষয় যুক্তরাষ্ট্রেও সত্য হতে পারে।’

‘বাংলাদেশ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়-প্রান্তিক শিশুর ওপর বিনিয়োগ  কোনো করুণা নয়,’ মন্তব্য করে নিকোলাস ক্রিস্টফ তার কলামের শেষ প্যারায় লিখেছেন, ‘এটি একটি জাতির উড্ডয়নের সহায়ক।’

সর্বশেষ খবর