সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
লকডাউনের পঞ্চম দিন

ব্যক্তিগত গাড়ি সিএনজি রিকশা বাড়ছে সড়কে

কঠোর অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় কমছেই না, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে চলমান সর্বাত্মক লকডাউনের পঞ্চম দিন গতকাল রাজধানীসহ সারা দেশেই মূল সড়কে বেড়েছে যানবাহন। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগত গাড়ি, পণ্যবাহী গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশার সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানীর অলিগলি, কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় লক্ষ করা যায়। অলিগলিতে দোকানপাটও খোলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ দোকানের একটি শাটারের অর্ধেক খুলে রাখেন। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শব্দ পেলেই শাটার নামিয়ে ফেলেন। কাঁচাবাজারে যথারীতি মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। অনেকেই ছিলেন মাস্কহীন। সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না। তবে আগামী বুধবারের পর আরও এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়তে পারে। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে, সর্বাত্মক লকডাউনের কঠোরতা কমে আসছে। এদিকে মেট্রোরেলের কাজ চলায় গতকাল বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ এলাকায় যানজটও লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে সড়কে পণ্যবাহী ছোট বড় মাঝারি ট্রাক ছিল চোখে পড়ার মতো।

লকডাউন বাস্তবায়নে গতকালও কঠোর অবস্থানে ছিল পুলিশ। ঢাকার  বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ ছিল সতর্ক অবস্থানে। র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার ভ্রাম্যমাণ আদালতও ছিল চোখে পড়ার মতো। যৌক্তিক কোনো কারণ না দেখিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ায় অনেককে জরিমানাও গুনতে হয়। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন মহানগর, জেলা ও উপজেলায় পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন ছিল কঠোর অবস্থানে। সকালে রাজধানীর শাহজাদপুর এলাকা থেকে মতিঝিলগামী এক বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গণপরিবহন না থাকলেও সিএনজি বা রিকশায় তিনি অফিসে যেতে পারছেন। এ জন্য তাকে কয়েকগুণ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এদিকে বিকালে রাজধানীতে ইফতার কিনতেও মানুষের আনাগোনা লক্ষ করা যায়। এমনকি মাগরিব ও এশার নামাজের পর চায়ের দোকানে ব্যাপক ভিড় জমায় সাধারণ মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এ চিত্র দেখা গেছে। সেখানে উপেক্ষিত ছিল স্বাস্থ্যবিধি। লকডাউন ও রোজার প্রভাবে কয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারগুলোতে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্য, মাছ-মাংস ও সবজির দাম। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা পাঠিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার লকডাউনের খবর-

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে ঢিলেঢালা চলছে লকডাউন। গতকাল পঞ্চম দিনও সকাল থেকে নগরজুড়ে সড়কে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। তবে গণপরিবহন না থাকায় পোশাক শ্রমিকসহ বিভিন্ন কারখানার লোকজনকে সকাল থেকে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পোশাক শ্রমিকরা কারখানার গাড়িতে চড়ে কাজে গেলেও অন্য শ্রমিকদের দুর্ভোগ লেগেই ছিল। এদিকে কারখানা খোলা থাকায় শ্রমিকদের কাজে পৌঁছতে দুর্ভোগের শেষ নেই। তবে রাইড শেয়ারিংয়ে অনেকে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। অনেকে রিকশায় পৌঁছতে দেরি হবে জেনে ভাড়া বেশি হলেও তাই রাইড শেয়ারিংয়ে করে কর্মস্থলে যান। যানবাহনের পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন স্থানে দোকানপাটও খুলতে দেখা গেছে। অধিকাংশ দোকানি তাদের একটি কপাট খুলে বেচা-কেনা চালিয়ে যাচ্ছেন। লকডাউন স্বাস্থ্যবিধি ও অন্যান্য নিয়ম মেনে চলছে কি না তা দেখার জন্য নগরের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক পুলিশের তল্লাশিচৌকি থাকলেও কার্যত কোনো তল্লাশি হয়নি। তবে কোনো কোনো এলাকায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়েছেন।

খুলনা : খুলনায় গতকাল লকডাউন ছিল ঢিলেঢালা। সকাল থেকে মহানগরীর অধিকাংশ দোকান বন্ধ থাকলেও সোনাডাঙ্গা, ডাকবাংলা, পিকচার প্যালেস মোড়ে দোকান খোলা ছিল। ইজিবাইক ও রিকশা চলাচল করেছে সীমিতভাবে। নগরীর রূপসা নদীর ঘাটে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকলেও জেলখানা ঘাটে ট্রলার চলাচল করেছে। বন্ধ নেই ফেরি পারাপারও। লকডাউনের মধ্যেও বড়বাজারের কালিবাড়ী রোডের দোকানগুলো স্বাভাবিক সময়ের মতো খোলা রয়েছে। দোকানের সামনে ট্রাকবোঝাই পণ্য আনলোডে ব্যস্ত ছিলেন শ্রমিকরা। ডাকবাংলা খেলাধুলা মার্কেটের গলির মুখে লকডাউনের জন্য বাঁশ ও সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও মার্কেটের ভিতরে বেচা-কেনা হয়েছে।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৪৫টি মামলায় ১৪ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রচারণা চালানো হয়।

সিলেট : সর্বাত্মক লকডাউনের পঞ্চম দিন গতকাল সিলেটের রাস্তায় আরও কঠোর ছিল পুলিশ। রাস্তায় বের হওয়া অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট গাড়ি ও রিকশা আটকে মামলা দিয়েছে দিনভর। মামলা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাগ্্বিতন্ডায়ও জড়ান অনেক অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলচালক। কিন্তু রেহাই মেলেনি মামলা থেকে। লকডাউনের মধ্যে রাস্তায় নামায় রিকশাচালকদেরও পেতে হয়েছে শাস্তি। ঘণ্টাখানেক আটকে রেখে পরে চাকার হাওয়া ছেড়ে রিকশা ফেরত দিয়েছে পুলিশ।

শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় ওই দুই দিন সিলেট নগরীতে যানবাহন চলাচল ছিল অনেকটা কম। গতকাল থেকে ব্যাংক, আদালতসহ সীমিত পরিসরে কিছুসংখ্যক অফিস খোলায় সকাল থেকে নগরীতে যানবাহন চলাচল বাড়ে। সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও রিকশা নিয়ে অনেকেই রাস্তায় বের হন। কিন্তু খুব বেশি সময় রাস্তায় স্বস্তিতে থাকতে পারেননি তারা। বেলা ১২টার দিক থেকে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা ও আম্বরখানাসহ বিভিন্ন স্থানে কঠোর অবস্থান নেয় পুলিশ। রিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন আটকে কাগজপত্র ও মুভমেন্ট পাস দেখা শুরু করে। এ সময় কাগজপত্র ও পাস দেখাতে ব্যর্থ হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয় পুলিশ। এ নিয়ে যানবাহনের মালিকদের সঙ্গে বাগ্্বিতন্ডাও হয়।

বরিশাল : স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখে গায়ের গেঞ্জি টেনে নাক-মুখ ঢাকার চেষ্টা করেছিলেন এক শ্রমিক। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালত মাস্ক না পরার দায়ে তাকে আর্থিক দন্ডের মধ্যে ফেলতে উদ্যত হন। কিন্তু দিনমজুর ওই যুবকের কাছে ছিল না টাকা। তাই তাকে জেলা প্রশাসনের একটি মাস্ক দিয়ে সতর্ক করে ছেড়ে দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজার নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নগরীর বাজার রোডে এ ঘটনা ঘটে। এভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১১ ব্যক্তি ও পাঁচ প্রতিষ্ঠান থেকে ৬ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজা ও লাকী দাসের পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রাজশাহী : রাজশাহীতে লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় গতকাল দিনের প্রথমার্ধে ৩৫ জনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় একজনকে সাত দিনের কারাদন্ডও প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ সরকার। আগের দিনগুলোর তুলনায় গতকাল কঠোর অবস্থানে ছিল প্রশাসন। ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা চলাচলও কম ছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে জেরার মুখে পড়তে হয়েছে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে আসা মানুষদের।

রংপুর : লকডাউনের পঞ্চম দিন গতকাল রংপুর মহানগরীর সড়কে যানবাহন ও বাজারে মানুষের উপস্থিতি গত চার দিনের চেয়ে বেড়েছে। তবে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত ছিল। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, রিকশা, অটোরিকশা, সাইকেল ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রবেশ করেছে নগরীতে। লোকজনের উপস্থিতিও ছিল বেশ। সকাল ৮টা থেকেই যানবাহন ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক তৎপরতা চালায় মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরীর ১২টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবহান ও পথচারীদের জেরার মুখে ফেলেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বের হয়েছেন তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে নগরীর সিটি বাজারে বিপুলসংখ্যক মানুষকে নিত্যপণ্য কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে বাজারের পাইকারি এলাকাসহ মাছ, মাংস, কাঁচাবাজার ও ফলের গলিতে মানুষকে দেখা যায় গা ঘেঁষে ঘেঁষে কেনাকাটা করতে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না।

বগুড়া : করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কঠোর লকডাউনে বগুড়ার নন্দীগ্রামে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে সক্রিয় রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হলেই গুনতে হচ্ছে জরিমানা। আগের দিন শনিবার ও গতকাল বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তৎপর ছিল কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা পুলিশ। মাস্ক না পরার অপরাধে তিনজনকে জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুল ইসলাম। চেকপোস্টে যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করাসহ বিনামূল্যে মাস্ক প্রদান করেন তিনি। কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যে কেউ ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে নামলেই প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন। মাস্ক না পরার অপরাধে জরিমানা গুনছেন।

হবিগঞ্জ : সারা দেশের মতো গতকাল হবিগঞ্জেও পঞ্চম দিনের মতো লকডাউন পালন করা হয়। তবে লকডাউন অমান্য করে জেলার বিভিন্ন সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটমসহ বিভিন্ন পরিবহন চলাচল করেছে। এ ছাড়া শহরের প্রতিটি কাঁচামালের বাজারে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে শহরের চৌধুরী বাজার কাঁচামালহাটায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখা যায়। এ বাজারের ব্যবসায়ীরা যেমন মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি, তেমনি ক্রেতারা মানছেন না। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। গতকাল জেলার বিভিন্ন স্থানে ১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ৪৬ জনকে ১৮ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা এবং ৬৩টি মামলা দায়ের করা হয়।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে পাঁচ দিনের সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকরে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন। সকাল থেকে সড়ক-মহাসড়কে বেড়েছে মানুষের চলাচল। মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, রিকশাযোগে চলাচল করতে দেখা গেছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে। সকাল থেকে প্রয়োজন ছাড়া চলাচল রোধে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। মোটরসাইকেল আরোহী থেকে শুরু করে সব ধরনের যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রীদের যাচাই করা হয়। এদিকে সড়ক-মহাসড়ক কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও হাটবাজারে নেই লকডাউনের চিহ্ন। সামাজিক দূরত্ব না মেনে মাস্ক পরিধান না করেই কেনাবেচা করতে দেখা যায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের।

কলাপাড়া : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লকডাউনের পঞ্চম দিনে দোকান খোলা রাখার দায়ে দুই ব্যবসায়ীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার দায়ে একজনকে ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল দুপুরে উপজেলার মৎস্যবন্দর আলীপুর বাজারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগদ্বন্ধু মন্ডল এ অর্থদন্ড প্রদান করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী উবাচু জানান, আলীপুর বাজারে দোকান খোলা রেখে মালামাল বিক্রি করার দায়ে রড ব্যবসায়ী মো. কবিরকে ১২ হাজার টাকা, ফ্রিজ ব্যবসায়ী মো. রাকিবকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার দায়ে মহীপুর বিপিনপুর গ্রামের মো. আবু বক্করকে ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগদ্বন্ধু মন্ডল জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে লকডাউন কার্যকর করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। লকডাউন কঠোরভাবে পালনের জন্য খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতা বেশ লক্ষণীয়। সরকারি নিষেধাজ্ঞা না মানার ফলে গতকাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা মতিন বাস টার্মিনাল, জিরোমাইল এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় মাস্ক পরিধান না করায় বেশ কিছু লোককে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।

বিশ্বনাথ (সিলেট) : বিশ্বনাথে হাট-বাজার বেসামাল হয়ে উঠেছে। উপজেলা সদরে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা। সবজি, ফল-মূল, মাছ-মাংসের বাজার ও মুদিদোকানসহ সবখানেই ক্রেতাদের ভিড়। কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। মাস্কবিহীন চলাফেরা করছে মানুষ। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে যেন জমজমাট চারপাশ। সড়কে গণপরিবহন ছাড়া চলছে অন্য সব যানবাহন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লকডাউনের আওতামুক্ত নয়, এমন বেশ কিছু খুচরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আংশিক খোলা হয়েছে। এসব দোকানে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে নারী ক্রেতাদের। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই ক্রয়-বিক্রয় চলছে সর্বত্র। ইফতারির দোকানেও রীতিমতো মানুষের জটলা। প্রশাসনের অভিযানেও কমছে না বাইরে আসা জনসাধারণের সংখ্যা। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর