সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় উঠে এসেছে গায়ত্রী অমর সিং নামে এক নারীর নাম। মিতুর পরিবার থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, গায়ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরেই এ খুনের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে মিতুর পিতা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলায়ও। তিনি বর্তমানে নেদারল্যান্ডসে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘এ খুনের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক গায়ত্রীর নাম এসেছে। মামলার এজাহারেও তার কথা উল্লেখ রয়েছে। খুনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে।’ মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গায়ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরেই মিতুকে খুন করা হয়েছে। যা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছি। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন তা জানা নেই।’
একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গায়ত্রী অমর সিং বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের রাষ্ট্র নেদারল্যান্ডে রটারডামে রয়েছেন। সেখানে তিনি ইউএনএইচসিআর-এর লিগ্যাল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। মিতু খুনের কিছু দিন আগে তিনি বাংলাদেশ ছাড়েন। জানা গেছে, আলোচিত নারী গায়ত্রী অমর সিং একজন ভারতীয় নাগরিক। তিনি এক সময় জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) ফিল্ড অফিসার (প্রোটেকশন) হিসেবে কমর্রত ছিলেন কক্সবাজারে। একইসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কক্সবাজারে দায়িত্বরত ছিলেন বাবুল আক্তার। অফিশিয়াল সূত্র ধরেই বাবুল আক্তার ও গায়ত্রীর পরিচয় হয়। পরে তা পরকীয়ায় রূপ নেয়। ২০১৪ সালে মিতুর নজরে আসে বাবুলের পরকীয়ার বিষয়টি। তখন বাবুল আক্তার শান্তিরক্ষা মিশনে সুদানে ছিলেন। বাবুল আক্তারকে দেওয়া গায়ত্রীর ‘তালিবান’ বই উঠে এসেছে দুজনের সম্পর্কের কিছু চিত্র। ওই বই নোটে লেখা রয়েছে-২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর গায়ত্রীর সঙ্গে প্রথম দেখা হয় বাবুলের। একে অপরকে প্রথমবার চুমো খান ৫ অক্টোবর। এর দুই দিন পর ৭ অক্টোবর দুজনের মধ্যে প্রথম শারীরিক সম্পর্ক হয়। ৮ অক্টোবর দুজনে প্রথমবারের মতো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হাঁটেন।প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের এক মাসের মধ্যেই এ খুনের সরাসরি অংশগ্রহণকারী এবং অস্ত্র সরবরাহকারীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী রাশেদ ও নবী।