সোমবার, ৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বাজেটের গাড়িতে যাত্রী তুলতে ভুলে গেছেন অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজেটের গাড়িতে যাত্রী তুলতে ভুলে গেছেন অর্থমন্ত্রী

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাজেটের গাড়িতে যাত্রী তুলতে ভুলে গেছেন অর্থমন্ত্রী। গত কয়েক বছরে বাজেটের মাধ্যমে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে রাস্তা বড় হয়েছে। কিন্তু সেই রাস্তার গাড়িতে পিছিয়ে পড়া মানুষকে যাত্রী হিসেবে তুলতে পারেননি অর্থমন্ত্রী। পিছিয়ে পড়া মানুষ ওই গাড়ির যাত্রী হতে পারেননি।

গতকাল অনলাইনে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ : পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কী আছে?’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন প্ল্যাটফরমের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। নাগরিক প্ল্যাটফরমের কোর গ্রুপের সদস্য ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এতে বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সিপিডির আরেক বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, এসডিজি প্ল্যাটফরমের কোর গ্রুপের সদস্য এবং বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্যবিদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। ওই সংবাদ সম্মেলনে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মূল প্রবন্ধে বলেন, করোনার কারণে হওয়া দেশের দেড় থেকে ২ কোটি নতুন গরিবকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাদের জন্য কোনো উদ্যোগ নেই। করোনায় নতুন গরিবের সংখ্যা বাড়ল কত, তা নিয়ে বাজেটে কোনো তথ্য নেই। তাই নতুন গরিবদের জন্য কোনো নীতিও নেই।

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, একটি ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। বাজেট থেকে প্রাতিষ্ঠানিক খাত বেশি সুবিধা পেয়েছে। অনানুষ্ঠানিক খাত তেমন কিছু পায়নি। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা বাজেট প্রণয়নে আমলে আনা হয়নি।

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, করোনার কারণে শিক্ষা খাত বিপর্যয়ের বিষয়টি বাজেটে আনা হয়নি। অনলাইনে সচ্ছল পরিবারের সন্তানরা বেশি ক্লাস করছে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা একদমই ক্লাস করতে পারছে না।

শাহীন আনাম বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া মানুষ কত আছে, তা নিয়ে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি আছে। তাই সঠিক নীতি নেওয়া যাচ্ছে না। এবারের বাজেট প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।’ ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, তথ্য না থাকায় পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। আবার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় গরিব মানুষের কাছে নগদ টাকা পৌঁছানো যাচ্ছে না।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম বলেন, করপোরেট কর কমানো হলেও করোনাকালে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেওয়ার তেমন উদ্যোগ নেই। মোশতাক রাজা চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য খাতের মৌলিক সমস্যা সম্পর্কে কোনো বক্তব্য নেই। সংস্কারের উদ্যোগ নেই। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে কভিডকে বড় সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এ জন্য একটি স্বাস্থ্য কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর