বুধবার, ২৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ভূমধ্যসাগরে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক স্বপ্ন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা এখনো সক্রিয়। থেমে নেই তাদের কার্যক্রম। বিশেষ করে লিবিয়া, তুরস্ক, গ্রিস, ইতালি, স্পেন পাঠানোর কথা বলে পাচারকারী চক্র সাধারণ মানুষ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ফলে ভূমধ্যসাগরে তলিয়ে যাচ্ছে অনেকের স্বপ্ন। সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ শরীয়তপুরের দুই যুবকের সন্ধান মেলেনি। নড়িয়া উপজেলার ওই দুই যুবকের বাড়িতে চলছে মাতম। সবকিছু হারিয়ে প্রাণ নিয়ে ফিরে এসেছেন অনেক যুবক।

নিখোঁজদের পরিবার জানায়, ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া ট্রলারটিতে ইতালির উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা। এর পর থেকে আর ওই দুই যুবকের সন্ধান পাচ্ছেন না স্বজনরা। নিখোঁজ ওই যুবকরা হলেন নড়িয়ার নওগাঁ গ্রামের সেলিম কাজীর ছেলে কাজী ফিরোজ আহাম্মেদ (৩০) ও ফতেজঙ্গপুর ইউনিয়নের শিলংকর গ্রামের লাল মিয়া ছৈয়ালের ছেলে নুর আলম (১৯)।

নড়িয়ার বিঝারী ইউনিয়নের নওয়া গ্রামের কাজী ফিরোজ মাহমুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় মা সকিনা বেগম খাটের এক কোণে বসে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে। অনেক কষ্ট করে এম এ পাস করিয়েছিলাম। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমার। সবকিছু শেষ হয়ে গেল। সাগরে নৌকাডুবির কথা শুনে আমরা লিবিয়ার দালাল সুজন ছৈয়ালের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সুজন ফোনে জানিয়েছে আমার ফিরোজের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, ওই নৌকাতেই ছিল ফিরোজ। আমি শুধু আমার ছেলেকে চাই। আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।’ নিখোঁজ নুর আলমের মা শাহিদা বেগম বলেন, ‘নদী ভাঙনে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেল।’ ঘটনা শুনেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন স্থানীয় দালাল চক্রের সদস্যরা। মানব পাচারকারী নড়িয়ার বাংলাবাজার এলাকার ফয়সাল মোল্যা ও সুজন ছৈয়ালের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাউকেই পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, তারা সবাই গা-ঢাকা দিয়েছেন। তবে ছেলের এমন ঘৃণিত কাজে লজ্জিত বলে জানান নড়িয়ার উপসি গ্রামের মানব পাচারকারী শফিক শেখের মা বৃদ্ধ শাহেরা বেগম। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) এস এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় কোনো ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন বলে আমাদারে কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর