বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
ফের রিমান্ডে পরীমণি

পিয়াসা রাজদের গাড়ির মালিকদের সন্ধানে সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চিত্রনায়িকা পরীমণি, প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ ছয়জনের বাসায় অভিযান চালিয়ে জব্দ ছয়টি দামি গাড়ির প্রকৃত মালিক কারা, সে বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ছাড়া তাদের বাসাবাড়ি থেকে যেসব মাদকদ্রব্য জব্দ হয়েছে এসবের উৎস কী, কোথা থেকে এসেছে, কারা সরবরাহ করেছে- এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আবারও রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাদের।

গতকাল বিকালে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান জানান, জব্দ গাড়িগুলোর প্রকৃত মালিক কারা তা বিআরটিএতে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ছয়টি গাড়ির মধ্যে পরীমণির গাড়িটি টয়োটা হেরিয়ার, পিয়াসার মাজদা ও বিএমডব্লিউ, নজরুল ইসলাম রাজের দুটি হেরিয়ার, শরিকুল হাসান ওরফে মিশু হাসানের ফেরারি গাড়ি রয়েছে।

এদিকে গতকালই পরীমণির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করে। এ ছাড়া মাদকসহ গ্রেফতার মরিয়ম আক্তার মৌকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মাহবুবুর রহমান বলেন, পরীমণি, পিয়াসা, মৌ, হেলেনা জাহাঙ্গীর, প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ১৫ মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আটটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। পরীমণিসহ তাদের মধ্যে ছয়জনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ছয়টি দামি গাড়ি, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ডিভাইস ও মোবাইল জব্দ করেছে সিআইডি। জব্দ করা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, যারা প্রতারণা করেছেন তাদের অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিআইডি শুধু মাদকের মামলাই দেখছে না। মাদক কোথা থেকে এসেছে, কীভাবে এসেছে; এর পাশাপাশি তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব, অর্থের উৎস, কারা দিয়েছেন, কোথা থেকে সেগুলো এসেছে সবকিছু তদন্ত করে দেখছে। এখন পর্যন্ত সিআইডি অনেক তথ্য পেয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তবে মামলা তদন্তাধীন হওয়ায় প্রকাশ করছে না। প্রতারক চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। যদি এ ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয় তা পরে জানানো হবে।

এ ছাড়া সিআইডি-প্রধান পরীমণি-পিয়াসা সংশ্লিষ্টদের কোনো তালিকা তৈরির খবর নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব মামলা তদন্তে এ ধরনের তালিকা করার কোনো এখতিয়ার সিআইডিকে দেওয়া হয়নি। শুধু তারা মামলাগুলো যথাযথভাবে তদন্ত করে দেখবেন। এ পর্যন্ত কতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংখ্যাটা বলা যাবে না। কারণ গতকালও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এমন কেউ এসেছেন কি না জানতে চাইলে ব্যারিস্টার মাহবুব বলেন, এমন মৌখিক অভিযোগ এসেছে। তাদের বলেছি, জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন হলে আমরা নোটিস দিয়ে ডাকব। আর পরীমণির চার দিনের হেফাজতে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। আরও কিছু জানার প্রয়োজন রয়েছে। তাই আবারও রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আদালতসূত্র জানিয়েছেন, পরীমণি ও দীপুর রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অন্তরালে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত আছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে আটকসহ পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রয়োজন। ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে বনানী থানার মাদক আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে ফের দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন। রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে লিফটে ওঠার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে পরীমণি বলেন, ‘কী করতাছেন আপনারা? একটা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে, আর আপনারা মিডিয়া তাকায়ে তাকায়ে দেখতাছেন?’ আগের রিমান্ড শেষে পরীমণি, রাজসহ চারজনকে গতকাল বেলা পৌনে ১২টার দিকে মালিবাগের সিআইডি কার্যালয় থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর