মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শিগগিরই উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ

সদস্য পাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

আরাফাত মুন্না

উচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার চাপ কমাতে শিগগিরই হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। হাই কোর্ট বিভাগে নিয়োগের জন্য এরই মধ্যে একটি খসড়া তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তালিকায় আইনজীবী ছাড়াও কয়েকজন জেলা জজের নাম রয়েছে। অন্যদিকে তালিকা তৈরি হচ্ছে আপিল বিভাগে নিয়োগেরও। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হাই কোর্টে ১৪ থেকে ১৮ জন এবং আপিল বিভাগে ৩ থেকে ৫ জন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। এদিকে গত ২৪ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সদস্য বিচারপতি আমির হোসেনের মৃত্যুজনিত কারণে ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের এই সদস্যের পদও খুব দ্রুতই পূরণ করা হচ্ছে। জানা গেছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। একই সময়ের মধ্যে হাই কোর্টেরও বেশ কয়েকজন বিচারপতি অবসরে যাবেন। এতে বিচারাধীন মামলা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আইনজীবীরা জানান, বর্তমানে এমনিতেই বিচারক সংকট রয়েছে। অল্প সময়েই আরও কয়েকজন অবসরে যাবেন। তাদের অবসরের আগে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচজন। গত এক দশকে এই সময়েই সবচেয়ে কম বিচারপতি নিয়ে কাজ করছে আপিল বিভাগ। কয়েক বছর আগেও এই বিভাগে ১১ জন বিচারপতি দায়িত্ব পালন করেছেন। এদিকে হাই কোর্ট বিভাগের মোট বিচারপতি ৯২ জন। এর মধ্যে ৫৩ বেঞ্চে দায়িত্ব পালন করছেন ৮৭ জন বিচারপতি। বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কাজ করছেন। অসদাচরণের দায়ে বিচারিক দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়েছে বাকি তিন বিচারপতিকে।

একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলা ছিল ১৫ হাজার ২২৫টি। অর্থাৎ গড়ে বিচারপতিদের মাথাপিছু মামলা ৩ হাজার ৪৫টি। আর হাই কোর্ট বিভাগে মামলা রয়েছে ৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৩টি। হাই কোর্ট বিভাগের ৯১ জন বিচারপতির জন্য গড়ে মাথাপিছু মামলা রয়েছে ৪ হাজার ৯২৩টি। বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আপিল বিভাগ একসময় মাত্র তিনজন বিচারপতি দিয়েও চলেছে। কিন্তু আমরা সে রকমটা চাই না। বিচারপতি নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। ধারাবাহিকভাবে এ নিয়োগ অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, শিগগিরই উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদস্যের শূন্যপদও পূরণ করা হবে। সংবিধানের ৯৪ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগে বিচারপতি সংখ্যা নির্ধারণ ও নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সংবিধানের ৯৪ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি (যিনি ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি’ নামে অভিহিত হইবেন) এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি যে সংখ্যক বিচারক নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করবেন, সেই সংখ্যক অন্যান্য বিচারক লইয়া সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হইবে।’ সংবিধান অনুযায়ী ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদে থাকা যায়।

সর্বশেষ খবর