বৈশ্বিক কভিড মহামারী মোকাবিলায় বিজ্ঞান ও সম্মিলিত রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর জোর দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে উচ্চ পর্যায়ের বিতর্কে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক আলোচনার টেবিলে ফিরে এসেছে। বিশ্বে সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।
সন্ত্রাস মোকাবিলার অঙ্গীকার করে বাইডেন বলেছেন, ২০০১ আর ২০২১ সাল এক নয়। তিনি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, জনগণের প্রয়োজন যে সরকার বোঝে না তার ঝুঁকি সন্ত্রাসের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলতি ৭৬তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্ক পর্ব শুরু হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। কভিড মহামারীর মধ্যে এবারই প্রথম বিশ্বনেতারা সশরীরে যোগ দিয়েছেন জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্কে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা বিতর্ক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত ছিলেন। মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহিদের সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো বক্তব্য দেন। এরপর বক্তৃতায় জো বাইডেন বলেন, ‘বুলেট ও বোমা দিয়ে কভিড-১৯ বা তার নতুন নতুন ধরন মোকাবিলা করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন বিজ্ঞান ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার সমন্বয়। বিশ্বজুড়ে জীবন রক্ষায় আমাদের অক্সিজেন, পরীক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধি এবং যত দ্রুত সম্ভব আমাদের বাহুতে টিকা নেওয়া প্রয়োজন।’ আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বাইডেন বলেন, অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে কভিড মহামারী ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য ছিল। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, তার সরকার ২০ বছরের যুদ্ধ শেষ করেছে। শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন, জনগণের জন্য ও জনগণের দ্বারা সরকারই শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা। বাইডেন বলেন, ‘এমন এক সময় আমি বক্তব্য দিচ্ছি যখন ২০ বছরে এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র কোনো যুদ্ধ করছে না।’ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি মিত্রদেরও রক্ষার অঙ্গীকার করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য স্পষ্ট ও অর্জনযোগ্য হতে হবে এবং বিশ্বজুড়ে সব সমস্যার সমাধানে অবশ্যই আমেরিকান সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে না।’ বাইডেন স্পষ্ট বলেন, সামরিক শক্তির ব্যবহার প্রথম নয়, বরং তা হবে শেষ অবলম্বন।