মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

জয়ের খোঁজে বাংলাদেশ

দুবাই স্পোর্টস সিটির প্রাণকেন্দ্রে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসির সদর দফতর। এর ঠিক পাশেই আইসিসি একাডেমি। এই একাডেমির ভিতর ঢুকলে বোঝার উপায় নেই যে আপনি মরুভূমির এক শহরে আছেন। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। এই সবুজের মধ্যেই গতকাল অনুশীলন করল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

দুবাই থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে আমিরাতের রাজধানী শহর আবুধাবিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আমিরাতের এই দুবাইয়েই মাহমুদুল্লাহদের ক্যাম্প। স্পোর্টস সিটির পাশেই টিম হোটেল। এখান থেকেই ম্যাচের দিন সকালে অন্য ভেন্যুতে যান ক্রিকেটাররা। আজও দুবাই থেকেই তারা খেলতে যাবেন আবুধাবিতে।

বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের আশা বাংলাদেশের নেই বললেই চলে। টানা তিন ম্যাচে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। তারপরও নিজেদের রেকর্ডকে সমৃদ্ধ করতে পরের দুই ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া টাইগাররা। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তো সেরা একাদশকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। কারণ, ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান। এমনকি আজ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানও ইনজুরির কারণে খেলছেন না। সাকিবকে নিয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, ‘সাকিব না থাকলে একাদশ বেছে নেওয়া খুবই কঠিন। কারণ, একজন বোলার কিংবা ব্যাটসম্যান বাড়তি খেলাতে হয়।’ সাকিবের অনুপস্থিতিতে ভাগ্য খুলে গেছে শামীম হোসেনের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে অভিষেক হতে যাচ্ছে তার। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি পার্টটাইম স্পিন বোলিং করেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই সদস্য। তবে আজ একজন বোলার কম নিয়েই খেলতে হবে বাংলাদেশকে। সেমিফাইনালের আশা শেষ হলেও আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয়ের জন্য মরিয়া টাইগাররা। কারণটা কাল সংবাদ সম্মেলনে নিজেই ব্যাখ্যা করলেন কোচ। রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, ‘বিশ্বকাপে এর আগে দ্বিতীয় ফেসে বাংলাদেশের জয় মাত্র একটি। তাই যেকোনো জয়ই রেকর্ড হয়ে থাকবে। সে কারণেই আমরা পরের দুই ম্যাচে জিততে চাই। আমাদের শেষ ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সেটি নিয়ে ভাবছি না। এখন ভাবনায় কেবল দক্ষিণ আফ্রিকা।’ সংযুক্ত আরব আমিরাতে উইকেট অনেকটা বাংলাদেশের মতোই। বেশ স্লো। কখনো কখনো হালকা বাউন্সও করে। তবে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ কারণেই আজ স্পিন দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর চিন্তা করছেন রাসেল ডমিঙ্গো, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা খুবই ভালো খেলছে এই টুর্নামেন্টে। আমি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অনেক দিন কাজ করেছি। তারা স্পিনে সব সময়ই কিছুটা দুর্বল। আশা করছি, এখানকার কন্ডিশন আমাদের সহযোগিতা করবে। আমি দক্ষিণ আফ্রিকার নির্দিষ্ট কিছু দিক চিহ্নিত করেছি। কিন্তু এখন যদি আমি সেটা বলে দেই দেখা গেল তা ঠিক হয়নি। তবে এই ম্যাচ নিয়ে আমরা টিম মিটিংয়ে অনেক আলোচনা করেছি।’ আজকের ম্যাচ নিয়ে সতর্ক দক্ষিণ আফ্রিকা। কেন না তাদের সামনে শেষ চারে যাওয়ার এখনো সুযোগ আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য থাকবে নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। তবে ওদের পরিকল্পনা কি তা জানি না। কিন্তু বিশ্বকাপের দিকে তাকালে দেখবে পাবেন, যারা পাওয়ার প্লেতে ভালো করছে তারা জিতেও যাচ্ছে। পাওয়ার প্লেতে ওদের দ্রুত উইকেট ফেলতে পারলেই হয়ে যাবে।’ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ভুগেছে পাওয়ার প্লেতে। এ ম্যাচে তাই ডমিঙ্গোও সতর্ক। কিন্তু প্রোটিয়া কোচ তো আর মাঠে গিয়ে ব্যাট করতে পারবেন না! খেলতে হবে বাংলাদেশের ওপেনারদের। এখন দেখা যাক, টাইগার ওপেনাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন কিনা! পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রেকর্ড মোটেও ভালো নয়। ছয় ম্যাচ খেলে সবকটিতেই হেরেছে। তবে টি-২০তে অতীত রেকর্ড খুব একটা কাজে আসে। টানা তিন ম্যাচে হারা হতাশ বাংলাদেশ কি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর