জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা তাদের নাগরিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। তারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চায়। তাদের নাগরিকত্ব, নিরাপত্তার গ্যারান্টি, চলাফেরার স্বাধীনতা, চাকরির সুযোগ, লেখাপড়ার অধিকার দিলেই তারা মিয়ানমারে ফিরে যাবে।
ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি রবিবার দুপুরে কক্সবাজারে উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অনিশ্চিত জীবন যাপন করছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যাকে আরও গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা। ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সেখানে ইউএনএইচসিআর পরিচালিত একটি কমিউনিটি সেন্টারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে তাদের চাহিদা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যতের প্রত্যাশা নিয়ে মতবিনিময়ে অংশ নেন। সেখানে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। শিশুদের লার্নিং সেন্টারে রোহিঙ্গা শিশু-কিশোরদের শরণার্থী জীবন কীভাবে কাটে তার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। পরে তিনি রোহিঙ্গা ধর্মীয় ইমাম, শিক্ষক ও কমিউনিটি লিডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় কমিউনিটি লিডাররা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের বিষয় নিয়ে কথা বলেন। ফিলিপ্পো গ্রান্ডি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তাব্যবস্থা, রোহিঙ্গা শরণার্থী ব্যবস্থাপনা ও এ বিষয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, আন্তর্জাতিক সহায়তা, হোস্ট কমিউনিটির জন্য করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত, ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সফরসঙ্গী ইউএনএইচসিআরের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ইন্দ্রিকা রাতওয়াত ও হাইকমিশনারের সিনিয়র উপদেষ্টা হারভে ডি ভিলারোশে। উল্লেখ্য, ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। ক্যাম্পেও এদিন সাংবাদিক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, ফিলিপ্পো গ্রান্ডি ২১ মে কক্সবাজার পৌঁছে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আজ তিনি ভাসানচর পরিদর্শন করবেন। এদিনই তাঁর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। ফিলিপ্পো গ্রান্ডি শনিবার পাঁচ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
