জোগান নিশ্চিত না করে আমদানি-নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করায় বর্তমানের সংকট তৈরি হয়েছে। বিদ্যুতের প্রাথমিক জ্বালানি জোগান না বাড়িয়ে পুরোপুরি আমদানি নির্ভরতা পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। এ সংকট স্বল্পমেয়াদি প্রকৃতির নয়। তাই সহজে এ সংকট থেকে মুক্তি মিলবে না। সরকারের বর্তমান ব্যবস্থাগুলো বেশির ভাগই স্বল্পমেয়াদি। সংকট থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর পদক্ষেপ খুঁজতে হবে।
গতকাল বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ : কতটা ঝুঁকিপূর্ণ’ শীর্ষক আলোচনা ও মিডিয়া ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান অংশ নেন। স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম বলেন, ‘সরকার বিদ্যুতের প্রাথমিক জ্বালানির জোগান দিতে না পারায় এ সমস্যা হয়েছে। দ্রুতগতিতে বিদ্যুৎ আনার জন্য এক সময় তেলভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজন ছিল। তবে সেটাকে তিন বা পাঁচ বছর পর্যন্ত রাখার পরামর্শ ছিল। কিন্তু সেটা না করে এখন পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ফলে তেলের ওপর নির্ভরতা অনেক বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশে যখন কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুরু হয়, তখন কয়লা ও তেল আমদানি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। একই সময়ে উচিত ছিল নিজেদের গ্যাসের জন্য অনুসন্ধান চালানো। ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, কভিড-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হলেও নতুন করে ৩ কোটি লোক দারিদ্র্যসীমায় যুক্ত হয়েছে। গ্রাম ও শহরের মানুষের আয় কমেছে। অর্থনীতিতে এক ধরনের অবিচারের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। নতুন নতুন দারিদ্র্য এ অবিচারের একটি। কিছু উন্নয়ন সূচক যেমন পুষ্টি ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এতে এসডিজির লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হবে। এ ছাড়া যুব বেকারত্ব বাড়ছে। আর এ তিনটি মিলে অর্থনীতিতে অবিচারের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে।