বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

হঠাৎ অন্ধকারে দেশ

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, দেশের বড় অংশ ছিল বিদ্যুৎহীন হাসপাতাল বিমানবন্দর মোবাইল ফোন সেবা ব্যাহত, বিঘ্ন অফিস কারখানার উৎপাদন, পানি সংকট, ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

হঠাৎ অন্ধকারে দেশ

বিদ্যুৎহীন কয়েক ঘণ্টায় গতকাল রাজধানীজুড়ে অন্ধকার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিদ্যুৎ সরবরাহে জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয়ে গতকাল দুপুরে হঠাৎ করেই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে দেশের বড় অংশ। দুপুর ২টার কিছু সময় পর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বড় এলাকায় ছিল না বিদ্যুৎ। ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জীবনযাপন। বিপর্যয়ে বিঘিœত হয় হাসপাতালের সেবা। ভোগান্তিতে পড়ে মোবাইল-ইন্টারনেট সেবা। বিঘিœত হয় বিমানবন্দরের কর্মকান্ড। দুর্ভোগ দেখা দেয় সিএনজি স্টেশনগুলোয়। বিদ্যুতের জন্য তৈরি হয় পানির ভোগান্তি। স্বাভাবিক কর্মকান্ড ব্যাহত হয় অফিস-আদালতে। উৎপাদন বন্ধ থাকে শিল্পকারখানায়। টানা ৪ ঘণ্টা দেশ ব্ল্যাকআউটে থাকার পর সন্ধ্যায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি। এর পরও রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেশ কিছু এলাকা ছিল বিদ্যুৎহীন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় গতকাল বিকালে জানায়, আকস্মিকভাবে দুপুর ২টা ৪ মিনিটে জাতীয় গ্রিডের ইস্টার্ন অংশে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ) সমস্যা দেখা দেওয়ায় অনাকাক্সিক্ষতভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ-পিজিসিবির প্রকৌশলীরা দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় গ্রিড সচল করতে নিবিড় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎসেবা চালু করা হবে বলে আশা করা যায়। পিজিসিবিসহ বিদ্যুৎ খাতের সব সংস্থা একযোগে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অনাকাক্সিক্ষত এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে বিনীতভাবে অনুরোধ করে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনে বিপর্যয় ঘটে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহের বড় এলাকা এ বিপর্যয়ের কবলে পড়ে, পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের আরও কিছু এলাকায় আংশিক বিদ্যুৎ চলে যায়। এক এলাকায় সমস্যা হলে সেটা অন্য এলাকাকেও আক্রান্ত করে। তবে কোন অঞ্চল থেকে সমস্যার সূত্রপাত, তা টেকনিক্যাল কারণে আমরা এখনই বলছি না।’ বারবার কেন সমস্যা হচ্ছে- এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণেই এমনটি হয়েছে বলে আমরা মনে করি। ওভারলোডের কারণে সমস্যা হয়নি। তবে আরও কোনো কারণ আছে কি না তা বুঝতে বেশ কিছু সময় প্রয়োজন।’ এক মাস আগেই জাতীয় গ্রিডের আরেকটি সঞ্চালন লাইনের বিভ্রাটে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল বিভাগসহ বিস্তীর্ণ এলাকা ৪০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু করতেও কিছুটা বিদ্যুৎ লাগে। আবার কোনো কারণে কোনো সঞ্চালন লাইনে লোড বেড়ে গেলে কেন্দ্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। কোনো কারণে কোনো কেন্দ্র বা সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো সিস্টেমে সরবরাহের ঘাটতি তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে কিছু এলাকা বিদ্যুৎহীন রেখে অথবা অন্য কোনো গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ এনে লোড সমন্বয়ের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা করা না গেলে অর্থাৎ লোড সমন্বয় না হলে অন্য কেন্দ্রগুলোর ওপর চাপ বাড়ে। এভাবে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেটর বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর নতুন করে কোনো কেন্দ্র বন্ধ হলে সরবরাহে ঘাটতি আরও বাড়ে এবং একইভাবে অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রও বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির কাউসার আলী বলেছেন, ৪ ঘণ্টা পর রাজধানী ঢাকার কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। উত্তরা, গুলশান, বারিধারা, মিরপুরসহ কয়েকটি এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে বাকি সব এলাকায় আসবে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও রাতের মধ্যেই সারা দেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে বলে জানানো হয়।

বিদ্যুৎ ছিল না বঙ্গভবনেও : গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে বিদ্যুৎ ছিল না দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বঙ্গভবনেও। অন্যসব এলাকার সঙ্গে দুপুরে বিদ্যুৎ চলে যায় বঙ্গভবনে। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গভবনের বিদ্যুৎ লাইনের সঙ্গে যুক্ত মানিকনগর সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ পুনরায় চালু করা গেছে বলে পিজিসিবির তরফে জানানো হয়।

বিঘ্নিত চিকিৎসাসেবা : বিদ্যুতের বিপর্যয়ের ফলে হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাবেবা বিঘিœত হয়। জেনারেটরে কোনোরকম চলে জরুরি সেবা। গতকাল দুপুর থেকেই রোগী নিয়ে বিপাকে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দেখা গেছে এমন চিত্র। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, দ্রুততম সময়ে বিদ্যুৎ না এলে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। হাসপাতালে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া এসি, লাইট-ফ্যান চালানো হচ্ছে না। বিদ্যুৎ না এলে অবশ্যই সমস্যায় পড়তে হবে। যেসব হাসপাতাল জেনারেটর দিয়ে সচল রাখা হয়েছে সেগুলোও দ্রুত বিদ্যুৎ না এলে বন্ধ হয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের জেনারেটর সার্ভিস চলছে। সেটা দিয়ে আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার চালানো হচ্ছে। হয়তো ওয়ার্ডগুলোয় রোগীদের একটু সমস্যা হতে পারে। ইমারজেন্সি জায়গাগুলোয় বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হয়েছে।’

মোমবাতির আলোয় হাই কোর্টের বিচারকাজ : জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চল বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়লেও থেমে থাকেনি উচ্চ আদালতের বিচারকাজ। গতকাল দুপুর ২টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর প্রথমে মোবাইলের আলোয় এবং পরে মোমবাতি দিয়ে বিচারকাজ চালিয়েছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ। বিকাল ৩টা পর্যন্ত এ বেঞ্চে বিচারকাজ চলে। এমন পরিস্থিতিতে বিচারকাজ চালিয়ে নেওয়ায় সাধুবাদ জানিয়েছেন আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে উচ্চ আদালতে অবকাশকালীন ছুটি চলছে। এ কারণে অধিকাংশ বেঞ্চের বিচারকাজই বন্ধ ছিল। দু-একটি বেঞ্চে বিদ্যুৎ না থাকার পরও বিচারকাজ চলেছে বলে শুনেছি। এ আদালতে উপস্থিত থাকা আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ‘বিদ্যুৎহীন অবস্থায় অনেক কষ্ট স্বীকার করে দুজন বিচারপতি দীর্ঘ সময় বিচারকাজ পরিচালনা করেছেন। এজন্য তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে সচিবালয়ে কাজকর্মে ব্যাঘাত : গতকাল দুপুর ২টার থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কোনো বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) জানান, তিনি কম্পিউটারে অফিশিয়াল কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে কাজ বন্ধ রেখে অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু অফিস সময় ৩টার পরও বিদ্যুৎ না আসায় কাজ অসম্পন্ন রেখে বাসায় যেতে হয়েছে। অথচ ওই ফাইলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অন্য একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানান, তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁকে পুরানো একটি নথির কয়েকটি পৃষ্ঠা প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। ওই পৃষ্ঠাগুলোসহ ফাইলটি সচিবের দফতরে পাঠানো হবে। কিন্তু বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ওই কপি প্রিন্ট করা যায়নি, ফলে সংশ্লিষ্ট ফাইলও সচিবের দফতরে পাঠানো হয়নি। সচিবালয়ের অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিদ্যুৎ না থাকায় প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

ব্যাহত বিমানবন্দরের কার্যক্রম : ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, সারা দেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব বিমানবন্দরে পড়েছে। দুপুর সোয়া ২টা থেকে সোয়া ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎসেবা বন্ধ ছিল। পরে বিশেষ ব্যবস্থায় কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হয়েছে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন খান বলেন, ‘দুপুরের পর থেকে এখানে বিদ্যুৎ নেই। জেনারেটর দিয়ে সব ধরনের কাজ সারতে হচ্ছে আমাদের।’

মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত : জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকায় বিঘিœত হয় মোবাইল ফোন সেবাও। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মোবাইল ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, তারা মোবাইলে কল, এসএমএস ও ইন্টারনেট সংযোগ পেতে সমস্যায় পড়েন। মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব এ সাময়িক দুর্ভোগের কারণে দুঃখ প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে অ্যামটব জানায়, গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাময়িক সময়ের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ না থাকায় নেটের ব্যবহার কমে গেছে।

বন্ধ ছিল সিএনজি পাম্প, ডিজেলের জন্য দীর্ঘ লাইন : বিদ্যুৎ না থাকায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার অনেক সিএনজি পাম্প বন্ধ ছিল। ফলে গ্যাস ভরতে আসা গাড়িচালকরা ভোগান্তিতে পড়েন। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় রাজধানীর বহুতল ভবনের বাসিন্দারাও দুর্ভোগে ছিলেন। অনেক ভবনের জেনারেটরও বন্ধ হয়ে যায় তেল ফুরিয়ে যাওয়ায়। বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন চললেও তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় ঢাকার বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে ডিজেলের জন্য দেখা দেয় লম্বা লাইন। বিকাল থেকেই লোকজন কনটেইনার নিয়ে তেলের জন্য তেলের পাম্পগুলোয় ভিড় জমান। সন্ধ্যায় ঢাকার বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পে খালি কনটেইনার ও ড্রাম নিয়ে লোকজনকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ডিজেলের জন্য অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।

তদন্ত কমিটি : জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিদ্যুৎ বিভাগকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। গতকাল বিকালে প্রতিমন্ত্রী জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি এবং তৃতীয় পক্ষের একটি কমিটি বিভ্রাটের কারণ খুঁজে বের করতে কাজ করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর