শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা নিয়ে সুখবর দিতে পারেননি চীনের রাষ্ট্রদূত

চীনের মধ্যস্থতায় সীমান্তে বোমাবাজি কমে যাওয়ার দাবি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে সুখবর দিতে চেয়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। এ নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় উভয়ের মধ্যে বৈঠকও হয়। কিন্তু রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নতুন কোনো সুখবর দিতে পারেনি চীনের রাষ্ট্রদূত। এ জন্য চীনের রাষ্ট্রদূতকে ‘নট গুড’ও বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য রেখায় থাকা প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে চীনা রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মূলত রোহিঙ্গা ইস্যুতেই আলাপ হয়েছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, রাষ্ট্রদূতকে  বললাম আপনি প্রজেক্টটা কতদিন ধরে নিয়েছেন আবার ঝুলিয়েও রেখেছেন, এটা নট গুড। আমাদের কত দিনের আশা। ভাবছি এ মাসে হবে, ও মাসে হবে... রাষ্ট্রদূতকে বলেছি আপনি তো সুখবর দিবেন বলেছিলেন। উত্তরে রাষ্ট্রদূত শুধু এই টুকুই বলেছেন, তারা (মিয়ানমার) এখনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায়, তারা এ নিয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে। কিন্তু রাষ্ট্রদূত নতুন কোনো সুখবর দিতে পারেননি। বলেছেন, সুখবর দেওয়া নিয়ে আশা করেছিলাম কিন্তু এখনো আশা পূরণ হয়নি। চীনের রাষ্ট্রদূতকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাগাদা দিয়েছি জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন, রাশিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মিয়ানমারের ভালো খাতির আছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন প্রথম অগ্রসর হয়ে আসে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের আগের সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের হওয়া চুক্তির আলোকেই দেশটির বর্তমান মিলিটারি সরকার প্রত্যাবাসনে রাজি আছে। কিন্তু তারা প্রত্যাবাসনের আগে রোহিঙ্গাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করবে। আগের সরকারও একই ভাবে তথ্য যাচাইয়ে সময় ক্ষেপণ করেছে। মিয়ানমারের মিলিটারি সরকার এখন বলছে- রোহিঙ্গাদের সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটির বিষয়টিও দেখবে এবং প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় আগ্রহ তৈরি হয় এমন পরিবেশ সৃষ্টি করবে। অথচ এতদিন হয়ে গেল তারা সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি। চীনের রাষ্ট্রদূতকে বললাম, আমার মনে হয় না প্রত্যাবাসনে তাদের আগ্রহ আছে। চীনা রাষ্ট্রদূত বললেন, তাদের (মিয়ানমার) আগ্রহ আছে। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে লজেস্টিক এবং প্রথম ব্যাচটা কীভাবে পাঠানো যায় সেই আলাপ করেছি। আমরা এর আগে দু-দুবার পাঠাতে চেয়েছি কিন্তু হলো না। মিয়ানমারের এ বিষয়ে উৎসাহ অনেক কম। তারা নিজেদের সমস্যা নিয়েই ব্যস্ত। রোহিঙ্গারা যখন আসে তারা তো পালিয়ে এসেছে। মিয়ানমার এখন প্রত্যাবাসনের জন্য তাদের ডকুমেন্ট চায়। তারা তো কোনোভাবে প্রাণে বেঁচে এসেছে, ডকুমেন্ট নিয়ে আসতে পারেনি। কিছু রোহিঙ্গা তারা নিতে চায়। কিন্তু দেখা যায়, সেই তালিকায় একই পরিবারের সবাই নাই। বাচ্চা থাকলে স্ত্রী নেই, স্ত্রী থাকলে আবার স্বামী নেই। আমরা বলেছি এভাবে হবে না,           নিলে পুরো পরিবারের সদস্যদেরই নিতে হবে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়টি আবারও বলেছি।

সর্বশেষ খবর