শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

লিজ ট্রাস

লিজ ট্রাস হুংকার দিয়েছিলেন তিনি আয়রন লেডি খ্যাত মার্গারেট থ্যাচারের মতো কঠোর হবেন। গত ১৯ অক্টোবরও পার্লামেন্টে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে হুংকার দিয়েছিলেন, ‘আমি ফাইটার, চলে যেতে আসেনি’। কিন্তু তিনি অটল থাকতে পারেননি। মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় তিনি বাধ্য হলেন ক্ষমতা ছাড়তে। পদত্যাগ করে ২০০ বছরে ব্রিটেনের সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রেকর্ড করলেন। ২০ অক্টোবর, ব্রিটেন সময় দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে তিনি দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ের সামনে এসে ঘোষণা করেন, তিনি আর দায়িত্বে থাকছেন না।

লিজ ট্রাস এই ৪৫ দিনের মধ্যে নিজে  ডুবেছেন, নিজ দলকে ডুবিয়েছেন, একই সঙ্গে নিজ দেশের অর্থনীতিকে তলানিকে নিয়ে গেছেন। সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে কনজারভেটিভ দল পাবে মাত্র ৪৮ আসন, আর লেবার পার্টি পাবে ৫০৭ আসন। ফলে বাঁচার জন্য বহিষ্কার করেছিলেন নিজের অর্থমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। তার পরও শেষ রক্ষা হলো না। সরে যেতে হলো তাকেই। লিজ ট্রাস পদত্যাগের বক্তব্যে জানান, তিনি এরই মধ্যে রাজা চার্লসকে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকেও সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন। কয়েক ডজন সাংবাদিকের সামনে দেওয়া বক্তব্যে লিজ ট্রাস বলেন, ‘অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিরাট এক অস্থিরতার সময়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছিলাম। যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমি কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর পদে এসেছিলাম, তা পূরণ করতে পারছি না।’ লিজ ট্রাস উল্লেখ করেছেন, তিনি দলের ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্রাডির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে। সে পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। প্রসঙ্গত, করোনা বিধিনিষেধের মধ্যে বাসায় পার্টি করাসহ নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বরিস জনসন। বরিসের সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের ভোটে দলীয় নেতা নির্বাচিত হন। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তিনি। ৪৫ দিনের মাথায় এলো তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হলেন লিজ ট্রাস। লিজ ট্রাসের সমস্যা শুরু হয় গত ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁর সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ার্তেং সংক্ষিপ্ত বাজেট উপস্থাপন করার পর। ওই বাজেটে কর কমানোর ঘোষণা দিলে যুক্তরাজ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। কমে যায় ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম। এরপর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে কাওয়াসি কোয়ার্তেংকে সরিয়ে দিয়েছিলেন লিজ ট্রাস। তবে তারপরও তাঁর পদত্যাগের দাবি তুলতে থাকেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা।

সর্বশেষ খবর