শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মার্কিন দূতাবাসের সামনে পরিত্যক্ত ব্যাগ তদন্তে সিটিটিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ও ভিসা সেন্টারের সামনে দুই দিনে তিনটি পরিত্যক্ত ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে। ওই ব্যাগগুলোকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে দূতাবাসজুড়ে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মিন্টো রোডে সিটিটিসি কার্যালয়ে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন দূতাবাসের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। সূত্র জানায়, সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ব্যাগ তিনটিতে তল্লাশি চালানোর পর ব্যাগে কোনো ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য বা ক্ষতিকার কিছু মেলেনি। মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ওই তিনটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে গুলশান ও ভাটারা থানা পুলিশ। তারা হলেন- আলফাজ উদ্দিন (৪৩) ও শফিকুল (৫০)। দুজনকে দেখেই মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, শফিকুলের কাছ থেকে ছুরি ও মাদক সেবনের ইনজেকশনের সিরিঞ্জ পাওয়া যায়। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় পুলিশ হেফাজতে তাকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় আমেরিকা দূতাবাসের উত্তর পাশে সাদা পলিথিনে মোড়ানো দুটি ট্রাভেল ব্যাগ দেখতে পাওয়া যায়। ব্যাগের সঙ্গে হোটেল অতিথি (আবাসিক) লেখা ছিল। পরে পুলিশ গিয়ে শাহজাদপুরের প্রগতি সরণির ক-৮৫/১, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় হোটেলের রসিদ পাওয়া যায়। এরপর হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে পাসপোর্টসহ আলফাজ উদ্দিনকে আটক করে গুলশান থানা পুলিশ। আলফাজ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়াচর উপজেলার সালুয়া গ্রামে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি দুই বছর আগে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন এবং কিশোরগঞ্জেই ছিলেন। তিনি আমেরিকা দূতাবাসের সামনে দুটি ব্যাগ রেখে গেছেন। তিনি একজন আধ্যাত্মিক লোক। তার আধ্যাত্মিক গুরু তাকে বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের কাছে একবার ৮ লাখ ডলার পেয়েছেন এবং পরে আরও ৭ লাখ ডলার পেয়েছেন। ওই ডলার সংগ্রহ করতেই তিনি ব্যাগ দুটি দূতাবাসে রেখে গেছেন। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন এবং অস্বাভাবিক ছিল। এদিকে মঙ্গলবার রাত ৮টায় আমেরিকা ভিসা সেন্টারের সামনে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি একটি খয়েরি রঙের ব্যাগ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ওই ব্যাগটি কুড়িয়ে নেন শফিকুল ইসলাম। পুলিশ পরে তল্লাশি করে তার কাছ থেকে ছুরি ও মাদক সেবনের ইনজেকশনের সিরিঞ্জ জব্দ করে। এদিকে ভাটারা থানা পুলিশের সন্দেহ হলে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়। ওই সময় পুরো এলাকা ঘিরে তল্লাশি শুরু করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। ব্যাগটি তল্লাশি করে পুরনো কিছু কাপড় পাওয়া যায়। তবে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ওই ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিটিটিসির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর