শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ভোলায় দৈনিক ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস মিলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বীপজেলা ভোলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের কূপ ‘টবগী-১’-এ গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কূপটিতে ২৩৯ বিলিয়ন (২৩ হাজার ৯০০ কোটি) ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে। এ কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) ঘনফুট হারে গ্যাস তোলা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এখানে মজুদ গ্যাসের মূল্য ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।

গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশজুড়ে চলমান জ্বালানি  সংকটের মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ সুখবরটির বিষয় নিশ্চিত করেন। জানা গেছে, কূপটি দ্রুত উৎপাদনক্ষম করার জন্য ৭ নভেম্বর কমপ্লিশন ও ক্রিসমাসন ট্রি স্থাপন কার্যক্রম শুরু হবে। নসরুল হামিদ জানান, দেশি জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানের জন্য ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে পেট্রোবাংলা মোট ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে নেওয়া প্রকল্পের আওতায় গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে গত ১৯ আগস্ট ভোলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের টবগী-১ কূপে ৩ হাজার ৫০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত খনন কাজ শুরু হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর ৩ হাজার ৫২৪ মিটার গভীরে খনন কাজ শেষ হয়।

 এরপর কূপে সম্ভাব্য গ্যাস মজুদ ও উৎপাদন হার জানতে কারিগরি পরীক্ষামূলক টেস্টিং (ডিএসটি) কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হয়। প্রতিমন্ত্রী জানান, সর্বশেষ পরিচালিত ডিএসটি কার্যক্রমে এ কূপ থেকে গড়ে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস ফ্লো টেস্ট করা হয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। শাহবাজপুর গ্যাস ফিল্ড থেকে টবগী-১ এলাকা আনুমানিক ৩ দশমিক ১৭ কিমি দূরে অবস্থিত। ভূতাত্ত্বিক তথ্য ও ডিএসটি রিপোর্ট অনুযায়ী এ অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ প্রায় ২৩৯ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। দৈনিক গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন বিবেচনায় এ কূপ থেকে ৩০-৩১ বছর গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হবে। টবগী-১ কূপে গ্যাসের বর্ণিত মজুদ বিবেচনায় গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮ হাজার ৫৯.০৮ কোটি টাকা; যা এলএনজি আমদানি মূল্য বিবেচনায় বহুগুণ।

প্রতিমন্ত্রী জানান, এ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরও দুটি কূপ (ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২) খনন কার্যক্রম শেষ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে তিনটি কূপ থেকে সর্বমোট দৈনিক ৪৬ থেকে ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে। তিনি বলেন, ‘শেভরন, নাইকোসহ অনেক প্রতিষ্ঠান গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করছে। আশা করি আমাদের সিস্টেমে তিন থেকে চার বছরের মাথায় ৭০০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে। তখন যে ঘাটতি থাকবে তা বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে।’ তবে ভোলার গ্যাস এখনই জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এজন্য প্রসেস প্লান্ট বসাতে হবে। অন্তত দেড় বছরের প্রয়োজন হবে। তবে অফগ্রিডের গ্যাস আনার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন স্বল্পপরিসরে গ্যাস আনা হবে। পরে স্থায়ীভাবে ভোলা-বরিশাল হয়ে পাইপলাইন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ও বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী।

সর্বশেষ খবর