শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

হেক্সা মিশনে ব্রাজিল

হেক্সা মিশনে ব্রাজিল

কাতারে হেক্সা হবে তোমাদের? হলুদ রঙের আলখেল্লা পরে আরবীয় সাজে রাস্তায় নামা ষাটোর্ধ্ব এক ব্রাজিলিয়ান সমর্থককে জিজ্ঞেস করতেই হেসে উঠলেন। তিনি পর্তুগিজ ছাড়া অন্য কোনো ভাষা জানেন না। কিন্তু ওয়ার্ল্ডকাপ আর ট্রফি শব্দের অর্থ ঠিকই জানেন। ‘ব্রাজিল, ব্রাজিল’ চিৎকার করতে করতে ভিড়ের ভিতর হারিয়ে গেলেন। কাতারে ব্রাজিলের অনেক সমর্থকই এখন নিজ দেশের নামে স্লোগান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। ঘুরে বেড়াচ্ছেন নানা রঙে সেজে। গতকাল ফ্যান জোনে তাদের উপস্থিতি অন্যদের তুলনায় যেন একটু বেশিই ছিল। এর কারণও আছে। আজ যে হেক্সার মিশন শুরু করছে ব্রাজিল। ষষ্ঠ বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের মিশনে শুরুতেই সার্বিয়ার মুখোমুখি হচ্ছেন নেইমাররা। লুসাইল স্টেডিয়ামে আজ স্থানীয় সময় রাত ১০টায় মাঠে নামছেন তিতের শিষ্যরা। বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নানা রকমের ডাটা ব্যবহার করে দাবি করেছে, এবারের বিশ্বকাপের ট্রফিটা ব্রাজিলের ঘরেই যাচ্ছে! কম্পিউটার নাকি তা-ই বলছে। ফুটবল বিশেষজ্ঞরাও এক নম্বরে রাখছেন নেইমার-ভিনিসাস-রডরিগোদের ব্রাজিলকে। এই দল এমন ভারসাম্যপূর্ণ এক দল, যারা সমন্ত্রণের পরিস্থিতিই সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এর কারণও আছে। দীর্ঘ সময় ধরে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিতে। ২০১৬ সাল থেকে। টানা দুটি বিশ্বকাপে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল দলের কোচ হিসেবে উপস্থিত থাকা সত্যি বিশেষ কিছু। মারিও জাগালো ব্রাজিলের কোচ হিসেবে দুটি বিশ্বকাপে ছিলেন। ১৯৭০ সালে কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন। ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের টুর্নামেন্টে জাগালো ছিলেন সহকারী কোচ। টানা দুই বিশ্বকাপে কোচের দায়িত্ব পালন করে এক অনন্য নজিরই গড়তে চলেছেন তিতে। তার কোচিং টেকনিকের প্রধান কৌশলই হলো, ফুটবলারদের কানে কানে সাফল্যের মন্ত্র ফুঁকে দেওয়া। তিনি বারবার ফুটবলারদের বলতে থাকেন, ‘খেলাটা আনন্দ নিয়ে খেলো। তবে দলের জয়ের ভূমিকা রাখো।’ গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসেও একই কথা বললেন তিতে, ‘আমি দলের সবাইকে বলেছি, চাপ নিও না। নিজেকে উজাড় করে দিয়ে খেলো। বিশ্বকাপটা উপভোগ করো।’ উপভোগের এই মন্ত্রই হয়তো ব্রাজিলকে এনে দিতে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা! ব্রাজিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। সর্বশেষ তারা বিশ্বকাপ জয় করেছে ২০০২ সালে। এশিয়ার মাটিতে (জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ায়)। এরপর বহু বছর কেটে গেছে। দুই দশক। ব্রাজিল আর বিশ্বকাপের ফাইনালও খেলতে পারেনি। এই সময়ের মধ্যে ২০১৪ সালে সেমিফাইনাল খেলাই ছিল তাদের সেরা ফল। তবে দীর্ঘ সময় পর ব্রাজিল আরও একটা দল পেয়েছে বিশ্বকাপ জয় করার মতো। গোলরক্ষক অ্যালিসন বর্তমান ফুটবলে সেরাদের একজন। ডিফেন্সের থিয়াগো সিলভা, মারকুইনহস, ড্যানিলো, এডার মিলিটাওদের পাশাপাশি আছেন ৩৯ বছরের অভিজ্ঞ দানি আলভেস। মিডফিল্ডে কাসেমিরো, ফ্রেড, পাকেতাদের সঙ্গে থাকবেন নেইমারও। মূলত ফরোয়ার্ড লাইনের হলেও নেইমারকে এবার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডেই রাখতে পারেন ব্রাজিল কোচ তিতে। ফরোয়ার্ড লাইনে থাকবেন ভিনিসাস জুনিয়র, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রডরিগো, পেড্রো ও রাফিনহারা। তিতে এমন এক দল পেয়েছেন, যাদের বিশ্বকাপ জয়ের মতো সম্ভাব্য সব যোগ্যতাই রয়েছে। এবার কেবল অপেক্ষা মাঠের লড়াইয়ের। সেখানে নিজেদের মেলে ধরতে পারলে ব্রাজিলের হেক্সার আশা এবার পূরণ হতেই পারে! ব্রাজিল আজ খেলতে নামছে সার্বিয়ার বিপক্ষে। এমন এক প্রতিপক্ষ, যাদের বিপক্ষে আগের দুবারের সাক্ষাতে দুবারই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ব্রাজিল। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিল জিতেছিল ১-০ গোলে। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে স্পার্টাক মস্কো স্টেডিয়ামে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারায় সিলেকাওরা। এবারেও জয়ের বিকল্প কিছু ভাবছে না ব্রাজিল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর