১০ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনেই গণসমাবেশ করবে বিএনপি। দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সব দুরভিসন্ধি, বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে রাজশাহী ও ঢাকায় অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশ সফল করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল রাতে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব তথ্য জানান। বিএনপি মহাসচিব এতে বলেন, বৈঠকে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের স্থান নির্বাচন নিয়ে সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক তৎপরতা নিয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে পূর্বঘোষিত ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ নয়াপল্টনে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। বিএনপি মনে করে, এই সমাবেশ বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে। বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান গণ-আন্দোলনকে দমন করার লক্ষ্যে অবৈধ সরকার পুনরায় সাজানো গায়েবি মামলা দিচ্ছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
প্রতিদিন অসংখ্য নেতা-কর্মীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশি ও হয়রানি করছে। এরই মধ্যে ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, ‘কোথাও বাধা দেওয়া হবে না’ বললেও বিএনপি নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতার করছে পুলিশ। বৈঠকে এ ধরনের নিকৃষ্ট দমননীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। অবিলম্বে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা বন্ধ ও প্রত্যাহারের দাবি এবং গ্রেফতার হওয়া নেতা-কর্মীদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় এর সব দায় এই সরকারকে বহন করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া বৈঠকে গত এক যুগে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অধিকাংশ ক্রমশ দুর্বল হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কাগুজে কোম্পানিকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার ঘটনা গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়ায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। স্থায়ী কমিটি মনে করে, বর্তমান অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিকল্পিতভাবেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতির মাধ্যমে ধ্বংস করে ফেলেছে। অর্থনীতি চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। বৈঠকে সামগ্রিক আর্থিক খাত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংবলিত প্রতিবেদন তৈরি করে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত হয় বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
