রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নকআউট উত্তাপ শুরু

আর্জেন্টিনার ম্যাচে টিকিটের হাহাকার

নকআউট উত্তাপ শুরু

আর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের টিকিটের জন্য ভোর ৩টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। নাম হাভিয়ের। এসেছেন আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্স থেকে। কাজ করতেন একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে। বিশ্বকাপ দেখতে আসার কথা উঠতেই কোম্পানি বলল, হয় চাকরি করো নয়তো বিশ্বকাপ দেখো। দুটো একসঙ্গে হবে না। হাভিয়ের চাকরিটা ছেড়ে দিয়েই বিশ্বকাপে এলেন। কিন্তু গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচের টিকিট পেলেও নকআউট পর্বের টিকিট পাননি তিনি। শেষ চেষ্টা হিসেবে হাভিয়ের দাঁড়িয়ে গেছেন দোহার মেইন টিকিটিং সেন্টারের সামনে। যদি মেলে!

হাভিয়েরের মতো এমন অনেকে নানা দেশ থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েই এসেছেন বিশ্বকাপ উপভোগ করতে। প্রিয় দলের খেলা দেখতে। আর্জেন্টিনার সমর্থক কিছুটা বেশিই এসেছেন কাতারে, অন্যদের তুলনায়। এর কারণও আছে। দীর্ঘদিন পর আবারও বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে আলবেসিলেস্তরা। লিওনেল মেসি, ডি মারিয়া, লওটারো মার্টিনেজরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন পূর্বপুরুষদের সোনালি অতীতের কথা। দিয়েগো ম্যারাডোনার ফুটবল খেলা দেখে ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলেও মুগ্ধ হয়েছিলেন। ড্যানিয়েল পেসারেলা, মারিও কেম্পেসরা ইতিহাসের সেরা দল গড়ে তুলেছিলেন। আর্জেন্টাইনরা সেই অতীত কখনো ভুলবে না। লিওনেল মেসিদের মধ্যে আর্জেন্টাইনরা খুঁজে পাচ্ছেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল। যারা প্রতিপক্ষকে একের পর এক ম্যাচে হারিয়ে চলেছেন। বিশেষ করে গ্রুপপর্বে শেষ ম্যাচে পোলিশদের বিপক্ষে লিওনেল মেসিদের খেলা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। আর্জেন্টিনার এমন মনোমুগ্ধকর ম্যাচ দেখার পর বিশ্বকাপ ট্রফির স্বপ্নই দেখছেন সমর্থকরা। আর্জেন্টাইনদের অনেকেই ইংরেজি ভালো জানেন না। এটা না জানা, ওদের জন্য দোষের কিছু নয়। কারণ পৃথিবীর অন্যতম সেরা ভাষা স্প্যানিশটা ওরা ভালোই জানেন। আর্জেন্টাইন সমর্থক হাভিয়ের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আমাদের এই দলটাই সেরা দল। ওদের বিশ্বকাপ জয়ের সব যোগ্যতা আছে।’ মেসি কি পারবেন আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করতে? মেসির নাম শুনতেই স্মিত হাসি উপহার দিলেন। কিছুক্ষণ পর হাসি থামিয়ে বললেন, ‘এই দলে মেসি আছেন এটা অনেক বড় পাওয়া। তবে মেসির একার ওপরে দায়িত্ব দিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। এই দলে ডি মারিয়া, লওটারো মার্টিনেজরাও আছেন। ওদের কথা ভুললে চলবে না।’ হাভিয়েরের মতো অনেক আর্জেন্টাইনই লিওনেল মেসির ওপর থেকে চাপ কমানোর জন্য এমন কথা বলেন। তবে তারাও ঠিক জানেন, মেসিই দলের প্রধান স্তম্ভ। বিশ্বকাপ ট্রফি জয় করাটা সহজ কাজ নয়। এ তো জানা কথাই। এই সোনালি ট্রফিতে চুমু খাওয়ার জন্য কত চড়াই-উতরাই পাড়ি দিতে হয়! খানাখন্দকে ভরা থাকে চলার পথ। একটু অসতর্ক হলেই পা পিছলে পড়তে হয় খাদে। যেখান থেকে উঠে দাঁড়ানোর আর সুযোগ থাকে না! এসব জানেন আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার এক আর্জেন্টাইন সমর্থক ফার্নান্দেজ। তিনি বললেন, ‘বিশ্বকাপ জয় করতে চাই আমরা। তবে কাজটা সহজ নয়। এটা বেশ কঠিন আর পরিশ্রমের কাজ।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর