বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আজই সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ

মেজবাহ্-উল-হক

ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের দারুণ সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জিতে ১-০তে এগিয়ে বাংলাদেশ। আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে লাল-সবুজরা। জিতলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে সিরিজ। ঘরের মাঠে  ২০১৬ সালের পর দ্বিপক্ষীয় কোনো ওয়ানডে সিরিজ হারেনি।  আজ ভারতকে হারিয়ে সাফল্যের সেই ইতিহাসে আরেকটি নতুন অধ্যায় সংযোজনে যাচ্ছেন টাইগাররা! প্রথম ম্যাচে সাকিব আল হাসানের স্পিন জাদু এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যারিশ্যাটিক ব্যাটিংয়ে অবিশ্বাস্য জয় পায় টিম বাংলাদেশ। তবে দল হিসেবেও দুর্দান্ত দাপট দেখিয়েছে স্বাগতিকরা। রোহিত-কোহলিদের ভয়ংকর ব্যাটিং লাইনআপকে বাংলাদেশ আটকে দিয়েছিল মাত্র ১৮৬ রানে। ধীরগতির উইকেটে ব্যাটিং ততটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত জিতে যাওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে আছেন টাইগাররা। বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটাররা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী। এটাও ঠিক যে প্রতিপক্ষ ভারত অনেক শক্তিশালী। কিন্তু তারা তো এখন ০-১ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে আছে। প্রথম ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও আমরা যদি আমাদের নার্ভ ধরে রেখে খেলতে পারি তাহলে ঠিকই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’ প্রথম ওয়ানডেতে সহজ ম্যাচটা কঠিন হয়েছিল মিডল অর্ডার ব্যাটারদের দায়িত্বহীনতায়। দারুণ শুরুর পরও মধ্যে মাত্র ৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল টাইগাররা। তবে এই ম্যাচে যাতে তেমন ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি না হয় -তা নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে অনেক কথা বলেছি। আমাদের বাউন্ডারি হাঁকানোর দরকার ছিল না ওই সময়। জানি, এই ম্যাচে আমাদের সামনে কঠিন পরিস্থিত অপেক্ষা করছে। তবে আমরাও আত্মবিশ্বাসী। যেকোনো চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। ওয়ানডে আমাদের পছন্দের ফরম্যাট।’ ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইটা দুই রকম। একদিকে যেমন স্কিলের পরীক্ষা দিতে হয় অন্যদিকে তেমনি মনস্তাত্ত্বিক লড়াইও করতে হয়। এর আগে অবশ্য মনস্তাত্ত্বিক সেই যুদ্ধে বারবারই হেরেছে বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করেও শেষ মুহূর্তে কিভাবে যেন ম্যাচে হেরে যেতেন টাইগাররা। তবে এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মনে বিশ্বাস এসেছে, ‘যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ’! শেষ উইকেট জুটির কল্যাণে কী অবিশ্বাস্য এক জয়। আত্মবিশ্বাসের গ্রাফটাও তলানি থেকে টপে উঠে গেছে এক ম্যাচে। বড় দলের বিরুদ্ধে জয় পেতে হলে এমন বিশ্বাসটা খুবই জরুরি ছিল। এই আত্মবিশ্বাসের কারণেই কিনা বাংলাদেশকে নিয়ে যেন খানিকটা ভয়ই পাচ্ছে ভারত। তা ছাড়া গ্যালারির দর্শকের অকুণ্ঠ সমর্থনও সফরকারীদের ব্যাকফুটে রাখছে। যদিও গতকাল প্রেস কনফারেন্সে ভারতীয় দলের প্রতিনিধি হিসেবে আসা তারকা ব্যাটসম্যান শিখর ধাওয়ান বললেন ভিন্ন কথা, ‘বাংলাদেশের দর্শকরা খুবই আবেগপ্রবণ। যেভাবে তারা তাদের দলকে উদাত্তভাবে সমর্থন করে সেটা দেখেও খুবই ভালো লাগে। এমন সমর্থন দেখে আমরাও আত্মবিশ্বাসী হই।’ আজও খেলা হবে ধীরগতির উইকেটে। যদিও মিরপুরে উইকেটের রহস্য সম্পর্কে আগে থেকে আন্দাজ করা কঠিন। তবে এখানে যে স্পিনাররাই রাজত্ব করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দিবা-রাত্রির ম্যাচ বলে টসও একটা বড় ফ্যাক্টর হতে পারে। যে দল টস জিতবে তারা ম্যাচ জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। শিশিরের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে বল গ্রিপ করা অনেক কঠিন হয়ে যায়। তা ছাড়া উইকেটে তখন ব্যাটিং করাও তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়। তবে টসে তো আর কারোর হাতে নেই। তা নিয়ে ভাবতেও চায় না টিম বাংলাদেশ। টাইগারদের এখন একটাই লক্ষ্য যেভাবেই হোক জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করা।

সর্বশেষ খবর