বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিরোধীদের গ্রেফতার হয়রানিতে উদ্বেগ মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র  দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে ব্রিফিংয়ে বলেন, বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপের ঘটনায় তাঁর দেশ উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘আইনের শাসনের প্রতি সম্মান দেখাতে এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকতে আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাই।’ মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা প্রার্থীকে হুমকি, উসকানি অথবা এক দল আরেক দল বা প্রার্থীর ওপর যাতে সহিংসতা ঘটাতে না পারে, বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’ ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন নেড প্রাইস। তিনি বলেন, ‘অর্থপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে হলে সহিংসতা, হয়রানি ও নির্ভয়ে ভোটারদের সঙ্গে প্রার্থীদের জনসংযোগ করার সুযোগ করে দিতে হবে। একই সঙ্গে সহিংসতার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং এসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারকে উৎসাহী করি।’ এ সময় বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেন, ‘সম্প্রতি পিনাকী ভট্টাচার্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা নিয়ে আমরা অবগত আছি। এ আইন নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা আমরা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনেও আমরা এ নিয়ে কাজ করেছি। আমাদের উদ্বেগ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনাও হয়েছে।’ নেড প্রাইস বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে দেখা যাবে না। এটিকে চাপ বা ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে না। বাংলাদেশে ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক সহিংসতার খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। স্বাধীন মতপ্রকাশ, সমবেত হওয়ার ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মতো মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

ঢাকা ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের : ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে বাংলাদেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের অনুরোধ করেছে ঢাকায় দেশটির দূতাবাস। গতকাল              মার্কিন দূতাবাস এক বার্তায় দেশটির নাগরিকদের এ সতর্ক করেছে।

দূতাবাসের বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে বা তার মধ্যে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলের সমাবেশ এবং অন্যান্য নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। সাধারণত নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভ ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়তে থাকে। বাংলাদেশের দুটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অনুশীলন করা উচিত এবং মনে রাখা উচিত যে, বিক্ষোভগুলো সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে এবং সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। মার্কিন নাগরিকদের বিক্ষোভ এড়াতে হবে এবং বড় সমাবেশের আশপাশে থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করুন।

এর আগে মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য তাদের ট্রাভেল অ্যাডভাইজরিতে ব্রিটিশ নাগরিকদের আসন্ন ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে চলাচল, যোগাযোগ ও যানবাহনের গতিবিধি বিঘ্নিত হতে পারে বলে দেশটির নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের অনুরোধ করেছে।

সর্বশেষ খবর