মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

এবার রিটার্ন জমা দেননি ৫৪ লাখ টিআইএনধারী

চলমান অর্থবছরে আদায় ৪১০০ কোটি টাকা

শাহেদ আলী ইরশাদ

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ৫৪ লাখ করদাতা তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেননি। যা মোট কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীর (টিআইএন) প্রায় ৬৫ শতাংশ। মোট টিআইএনধারীর মধ্যে রিটার্ন দাখিল করেছেন ২৮ লাখ ৫১ হাজার। তাদের কাছ থেকে আদায় হয়েছে ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, মোট রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রতিবেদন চূড়ান্ত  করার কাজ এখনো শেষ হয়নি। মোট কর শনাক্তরণ নম্বরধারীর পরিমাণ ৮২ লাখ ৫০ হাজার। ১০ বছরে করদাতার সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

এনবিআরের কর তদারকি ও সমন্বয় বিষয়ক বিভাগ সারা দেশের কর অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ব্যক্তিগত করদাতারা যদি সময়মতো তাদের রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে তারা সময় বাড়ানোর জন্য রাজস্ব কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে জরিমানা ছাড়াই তারা রিটার্ন জমা দিতে পারবেন এবং এই কার্যক্রম চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে। তারা বলেন, চলতি অর্থবছরের জন্য মোট কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) ৪০ শতাংশের বেশি আয়কর রিটার্ন জমার হার বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। মোট আয়কর রিটার্ন দাখিলের মধ্যে প্রায় ৭৪ শতাংশ রাজধানী ঢাকার, ১৬ শতাংশ চট্টগ্রামের এবং ১১ শতাংশ সারা দেশের।

এনবিআরের মতে, টিআইএনধারীর সংখ্যা ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আয়কর রিটার্ন দাখিলের হার বার্ষিক ১১ শতাংশ ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ২৬ লাখ টিআইএনধারী তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমার হার এখনো সর্বনিম্ন। যেখানে ভারতে রিটার্ন জমার হার ৭১ শতাংশ, পাকিস্তানে ৩৩ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৮৮ শতাংশ, নেপালে ৭২ শতাংশ এবং ভুটানে ৪৪ শতাংশ।

এনবিআর সূত্র জানায়, কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীর তুলনায় আয়কর রিটার্ন জমার পরিমাণ কম হলেও গত ১০ বছরের ব্যবধানে রিটার্ন জমার পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১০ লাখ টিআইএনধারী তাদের রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। ২০১৪-১৫ তে জমা দিয়েছেন ১১ লাখ ৫০ হাজার, ২০১৫-১৬ তে জমা দিয়েছেন ১২ লাখ, ২০১৬-১৭ তে ১৩ লাখ, ২০১৭-১৮ তে জমা দিয়েছেন ১৫ লাখের বেশি, ২০১৮-১৯ এ জমা দিয়েছেন ২০ লাখ, ২০২০-২১ এ জমা দিয়েছেন ২২ লাখ, ২০২১-২২ এ জমা দিয়েছেন প্রায় ২৬ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, দেশের মোট ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষের কর দেওয়ার সক্ষমতা থাকলেও করের আওতার বাইরে রয়েছেন মধ্যে ৩৩ লাখ। করদাতাদের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমার অভ্যাস গড়ে তুলতে সরকার চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে ৩৮ ধরনের সেবা পাওয়ার জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলে প্রমাণ জমা বাধ্যতামূলক করেছে। আয়কর আইন অনুযায়ী, ব্যক্তি করদাতারা ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারলেও করদাতার সংখ্যা বাড়াতে এক মাস সময় বাড়িয়েছিল এনবিআর। ২০২০ সালের ৩০ এবং ৩১ ডিসেম্বর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এনবিআর আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছিল।

 

সর্বশেষ খবর