বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
মাঠে মুখোমুখি দুই দল

সতর্ক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সতর্ক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ

১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিএনপির গণ অবস্থান কর্মসূচির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে যাবে না আওয়ামী লীগ। তবে নিয়মিত কর্মসূচি নিয়ে জনগণের ‘নিরাপত্তায়’ মাঠে থাকবে দলটি। রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিট ও থানার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সতর্ক পাহারায় থাকবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। মূলত বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের

নেতা-কর্মীদের সরব রাখতে এবং রাজনীতির মাঠে বিএনপির বিশৃঙ্খলা ঠেকাতেই এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা  বলেছেন, আজ বুধবার বিএনপির দেশব্যাপী অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সব ইউনিট, ওয়ার্ড, থানার নেতা-কর্মীরা সতর্ক অবস্থানে মাঠে থাকবে। কোনো দলকে হামলা করার উদ্দেশ্য নয়, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে এবং বিএনপির নাশকতা ঠেকাতে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপির আন্দোলন মানেই জ্বালাও-পোড়াও আর সহিংসতা-সন্ত্রাস করা। সরকারি দল হিসেবে জনগণের জান-মাল রক্ষা আমাদের দায়িত্ব। যদি তারা মিছিলের নামে, সভার নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তাহলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচিকে আমরা চ্যালেঞ্জ মনে করি না। এটা বিএনপির ফাঁকা আওয়াজ। দেশের মানুষ তাদের পক্ষে নেই।

বিএনপির গণঅবস্থান প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনের নামে যে কোনো ধরনের সহিংসতার সমুচিত জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত। ১০ ডিসেম্বর তো গেল, আওয়ামী লীগ কি মোকাবিলা করেনি? আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ, অনেক বেশি শক্তিশালী। আমরা যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র, যে কোনো ধরনের আন্দোলনের নামে সহিংসতার সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত। 

আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি সক্রিয়। তাই নির্বাচন নিয়ে দলটি যাতে কোনো ষড়যন্ত্রে মেতে উঠতে না পারে সেজন্য কৌশলী অবস্থান নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে বিএনপির সরকারবিরোধী কর্মসূচিগুলোতে বাধা না দিয়ে একই দিনে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসীনরা। গত দুই দিন আগে রাজধানীতে শান্তি সমাবেশের জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা গণঅবস্থান করতে পারে। কিন্তু গণঅবস্থানের নামে যদি জনদুর্ভোগ তৈরি করে তাহলে জনগণ তাদের গণঅবস্থান থেকে তুলে দেবে। কাউকে জনদুর্ভোগ করতে দেওয়া যাবে না। আন্দোলন-সংগ্রাম যে কেউ করতে পারে। কিন্তু যদি কেউ জনদুর্ভোগ করে তাহলে জনগণ কাউকে রাস্তায় দাঁড়াতে দেবে না।

দলটির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপির আন্দোলনের অতীত অভিজ্ঞতা বেশি ভালো নয়। আমরা অতীতে দেখেছি বিএনপির আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করে। তাদের নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের হাত থেকে সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা কেউ ছাড় পায়নি। কিন্তু আর বিএনপিকে এ সুযোগ দেওয়া হবে না। শান্তিপূর্ণ এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিরোধী শিবিরে অনেকটাই চাপ তৈরি হবে বলে মনে করছেন তারা। একই সঙ্গে বিদ্যমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধীরা যেন কোনোভাবেই রাজনৈতিক ফল ঘরে তুলতে না পারে, সেটি মাথায় রেখেই এ কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচির প্রেক্ষিতে প্রতিটি ওয়ার্ডে নেতা-কর্মীদের সতর্ক ও সজাগ থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকেই আমাদের অবস্থান থাকবে।

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, কেউ যেন কোনো অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য প্রতিটি থানা ওয়ার্ডে আমাদের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগের অবস্থান কর্মসূচি : আজ সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শাহবাগ চত্বরে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর