বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল

প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন, চূড়ান্ত হচ্ছে ভোটার তালিকা

গোলাম রাব্বানী

ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করেছে কমিশন। এ নির্বাচনের নির্বাচন কর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ১ ফেব্রুয়ারি ছয়টি আসনের উপনির্বাচন শেষে প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। এর পরই নির্বাচন নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্বাচন কর্তা। বৈঠকে তফসিল ও ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এ বৈঠক হতে পারে।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তফসিল ঘোষণার পর ১০-১২ দিন সময় থাকবে মনোনয়নপত্র দাখিলের। এক দিন সময় থাকবে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার। প্রত্যাহারের সময় থাকবে পাঁচ-ছয় দিন। এরপর ভোট গ্রহণের জন্য সাত-আট দিন সময় দেওয়া হবে। তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী একজনের বেশি না হলে, একক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র পরীক্ষা শেষে তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে বিধিমালা অনুযায়ী ভোট হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি হওয়াটা প্রায় নিশ্চিত। ২৪ এপ্রিল শেষ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ। সে ক্ষেত্রে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে করতে হবে এ নির্বাচন। সংসদের চলতি অধিবেশন ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে বলে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেবার ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত হন তিনি। এদিকে যথাসময়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের এ প্রক্রিয়া আমরা ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।’ তিনি বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন হবে। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইন অনুযায়ী স্পিকারের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচন প্রসঙ্গে আলাপ হবে। বর্তমান সংসদে ৩৫০ আসনের মধ্যে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করার পর সাতটি আসন শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি আসনের উপনির্বাচন রয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি। পরে এ ছয় আসনের ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে একটি সংরক্ষিত আসনের নির্বাচন হবে। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, (১) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে এ পদ শূন্য হলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সংসদ সদস্যরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সর্বশেষ খবর