বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
মাইক পম্পেও

ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ছিল

প্রতিদিন ডেস্ক

ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ছিল

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন, ২০১৯ সালে পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের বিমান হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে এই যুদ্ধ রোধ করা সম্ভব হয়। সূত্র : এএফপি, পিটিআই, ডন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ কূটনীতিক ও সাবেক সিআইএর প্রধান হিসেবে মাইক পম্পেও তাঁর স্মৃতিকথামূলক ‘নেভার গিভ অ্যান ইঞ্চি ফাইটিং ফর দ্য আমেরিকা আই লাভ’ বইয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। বইটি গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪১ আধা সামরিক সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি জঙ্গিগোষ্ঠীকে দায়ী করা হয়। এর পরই পাকিস্তান সীমান্তের ভিতর বিমান হামলা চালায় ভারত। এ ঘটনায় পাকিস্তান একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাইলটকে আটক করে। পম্পেও তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব যে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, সে বিষয়ে বিশ্ব সঠিকভাবে জানে, আমি তা মনে করি না।’ সাবেক এই মার্কিন কূটনীতিক জানিয়েছেন, সে সময় তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সুষমা তাঁকে জানিয়েছিলেন, বিমান হামলার ঘটনায় পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। ভারতও তার পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বইয়ে পম্পেও লিখেছেন, সে সময় ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য হ্যানয়ে ছিলেন।

 কিন্তু তাঁর দল এই সংকট এড়াতে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে রাতের মধ্যেই কাজ করেছিল। পম্পেও বলেন, ‘ভিয়েতনামের হ্যানয়ে থাকার সময় ওই রাতের কথা কখনই ভুলব না। সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করাই শুধু যথেষ্ট ছিল না। কাশ্মীরের সীমান্ত নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিরোধের কারণে ভারত ও পাকিস্তান তখন একে অন্যকে হুমকি দেওয়া শুরু করেছিল।’ তিনি তাঁর বইয়ে বলেছেন, হ্যানয় থেকেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। সব শুনে তিনি ভারতকে কিছু না করতে বলেছিলেন। বিষয়টি বোঝার জন্য কিছু সময় চেয়েছিলেন তিনি।

‘নেভার গিভ অ্যান ইঞ্চি’ বইয়ে পম্পেও আরও লিখেছেন, ‘আমি রাষ্ট্রদূত (তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা) জন বোল্টনের সঙ্গে কাজ শুরু করেছিলাম। পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গেও কথা বলেছিলাম। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা যা করেছি, তা অন্য কোনো দেশ করতে পারেনি। জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ডেভিড হাল পাকিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনিও ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অগ্রাধিকারের বিষয়টি জানতেন।’ ৫৯ বছর বয়সী সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলে তিনি বুঝেছেন, ভারতই পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরপর কোনো পক্ষই আসলে এমন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে না- এটা নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদকে বোঝাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে গেছে।

সর্বশেষ খবর