শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিন ফসলি জমিতে কোনো প্রকল্প নয় : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন ফসলি জমিতে কোনো প্রকল্প নয় : প্রধানমন্ত্রী

তিন ফসলি জমিতে কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না বলে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর গতকাল বিকালে সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত এজেন্ডার বাইরেও একটা বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্ত্রণালয় বা অধিদফতর বা সংস্থার ক্ষেত্রে তিন ফসলি জমিতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বা স্থাপনা তৈরির কাজে ব্যবহৃত করা হচ্ছে বলে আবেদন পাওয়া যাচ্ছে। সোলার প্যানেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থাপনা, ভবন তৈরি করার প্রস্তাব বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, কোনো তিন ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। সেখানে কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না। এটি আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। এটা এখন থেকে নিয়মিতভাবে তদারক করা হবে। বেসরকারি ক্ষেত্রও এ নির্দেশনার মধ্যে পড়বে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো ক্ষেত্রেই প্রকল্প হতে পারবে না। সরকারি-বেসরকারি সব লেভেলে এটা কার্যকর থাকবে। কোনো তিন ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। প্রকল্প নেওয়ার সময় যাচাই করে দেখা হবে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছেও নির্দেশনা পাঠানো হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

প্রতিটি আন্দোলনে মোছলেম উদ্দিন পাশে থেকেছেন : সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরহুম মোছলেম উদ্দিন এমপির কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণা করে বলেছেন, মোছলেম উদ্দিন দল ও দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। চিরদিন তাঁকে জাতি স্মরণ করবে। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে মোছলেম উদ্দিন আহমদ পাশে থেকেছেন। তিনি আমাদের দলের দুঃসময়ে পাশে যেমন ছিলেন, জাতীয় স্বার্থেও যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেও আমার চট্টগ্রামের জনসভার আয়োজন করতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। এ সময় তিনি একটি কেমোও নেননি। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে সংসদে আনীত শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী গতকাল অধিবেশনের শুরুতে মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পরে এর ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। সংসদ নেতার প্রস্তাব ও সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী গতকাল সব কার্যক্রম স্থগিত রেখে সংসদ অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এর আগে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয় এবং এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে তাঁর বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবের আলোচনায় আরও অংশ নেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সরকারদলীয় সদস্য শামছুল হক চৌধুরী, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, মসিউর রহমান রাঙ্গা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাঁকে সভাপতি করেছি। তবে আমারও একটি দ্বিধা ছিল তিনি বেঁচে থাকবেন কি না। কারণ তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আমি প্রতিনিয়ত সেই খবরটি পাচ্ছিলাম। শেষ পর্যন্ত তিনি আমাদের ছেড়ে চলেই গেলেন। সংসদ নেতা বলেন, আমরা তাকে এক-দুবার নমিনেশন দিয়েছিলাম। তখন হয়তো জয়ী হতে পারেননি। ২০২০ সালে নমিনেশন পেয়ে জয়ী হয়ে এলেন। তিনি খুবই খুশি ছিলেন, যে তিনি সংসদ সদস্য হতে পেরেছেন। তিনি জনগণের কথা সংসদে বলতে পারবেন। আজকে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তিনি বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করে তিনি উঠে এসেছেন। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বা তার আগের আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সবসময় সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় অপারেশন চালাতে গিয়ে তিনি ও মহিউদ্দিন চৌধুরী গ্রেফতারও হন। তারা যথাযথ গেরিলার মতোই কাজ করেছিলেন। সেখান থেকে মুক্ত হতে সক্ষম হন। মুক্ত হয়ে আবারও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর যারা চট্টগ্রামে প্রতিবাদ করেছিলেন, মোছলেম উদ্দিন তাদের সঙ্গেই ছিলেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলন, খালেদা জিয়ার ভোট চুরির বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাঁর অবস্থান উপলব্ধি করেছি। সব সময় তাঁকে পাশে পেয়েছি। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর যখন আওয়ামী লীগের নেতারা নিশ্চুপ ছিলেন, বেসুরে কথা বলছিলেন তখন মোছলেম উদ্দিন আহমদ দলের সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে সরব ছিলেন।

’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তিনি দলকে সংগঠিত করেছেন। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

সর্বশেষ খবর