বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের প্রস্তুতি

৪০-৪৫ হাজার ইভিএমে ত্রুটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসির হাতে থাকা দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর মধ্যে ভালো আছে ১ লাখ ৫ থেকে ১০ হাজার। এ ছাড়া ৪০-৪৫ হাজার ইভিএমে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ ইভিএমগুলো মেরামতের জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে পাঠানো হচ্ছে। এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসির হাতে সংরক্ষিত ইভিএম দিয়ে ৫০টি আসনে ভোট করার প্রাথমিক চিন্তা রাখা হচ্ছে। তবে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কত আসনে ইভিএমে ভোট হবে।

এ বিষয়ে ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে ৭০ হাজার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ) সংরক্ষিত রয়েছে। ৮০ হাজারের মতো ইভিএম মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে কাগজের বক্সে মাঠে পাঠানো ইভিএমের পরিমাণ ৪০ থেকে ৪৫ হাজার হবে। এগুলো সবকটিতেই কিছু রক্ষণাবেক্ষণ বা সাপোর্ট লাগবে। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ হয়ে গেলে নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে।

তিনি বলেন, আমরা মাঠপর্যায় থেকে নিয়ে এসে এগুলোকে হার্ড বক্সিং করে, প্লাস্টিকের বক্স করে, পুরো সেট করে সংসদ নির্বাচনে যদি ব্যবহার হয়, সেক্ষেত্রে যেভাবে এটা সেট থাকার কথা, সেভাবে সেট মিলিয়ে মাঠপর্যায়ে নিয়ে যাব।

কাগজের প্যাকেটে আর ইভিএম সংগ্রহ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ইভিএম প্রকিউরমেন্ট হয়েছিল একটি কন্ট্রোল ইউনিট ও দুটি ব্যালট ইউনিট হিসেবে। তারপরে ইভিএমগুলো বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে ব্যবহার হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যালট ইউনিট একটি, কোনো ক্ষেত্রে দুটি, কোনো ক্ষেত্রে তিনটি, কোনো ক্ষেত্রে চারটাও প্রয়োজন হয়েছে। এ জন্য ইভিএম যেভাবে সেট করা ছিল, সেভাবে সেট করাও নেই। যে কারণে আমাদের সেট মেলানোটাও প্রয়োজন। এগুলো কেনার জন্য ডিপিপিতে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল, সেভাবে সেব ইকুয়েপমেন্টসহ অর্গানাইজড করছি। ত্রুটিপূর্ণ ইভিএম ব্যবহার উপযোগী করতে কী রকম অর্থ লাগতে পারে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই অর্থটা আমরা হিসাব করিনি। আমাদের এখানে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ একটা বরাদ্দ আছে। এটা আমরা বিএমটিএফে পাঠাব। বিএমটিএফ এরটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। রক্ষণাবেক্ষণ করার পরে ওরা অ্যাসেসমেন্ট করে আমাদের হিসাবটা দেবে। তখন সে অনুযায়ী চুক্তি করে আমরা কার্যক্রমটি নেব। তিনি বলেন, আমাদের দেড় লাখ ইভিএম আছে। আমরা চেষ্টা করছি কতগুলো ইভিএম রেডি করা যায়। এ জন্য আমরা কিউসি করছি। এটি চলমান রয়েছে বিধায় নির্বাচন করার জন্য কতটুকু সক্ষমতা রয়েছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যবহারের চেষ্টা করব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব মিলিয়ে ৩৫ শতাংশ কোয়ালিটি চেকিং (কিউসি) করা বাকি আছে। বিএমটিএফ কাজটি করছে। এক্ষেত্রে আগামী মার্চের মধ্যে জানা যাবে সংসদ নির্বাচনে কতটি মেশিন ব্যবহারযোগ্য। এখন বলা সম্ভব নয়। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো আসনে ৩ লাখ ভোটার রয়েছে। আবার কোনো আসনে ১৯ লাখ ভোটার রয়েছে। কোথাও সেম নম্বরে (ভোটার সংখ্যা) একটা আসন হয়, কোথাও পাঁচটা আসন হয়। আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। তাই কোনো আসন যে কমিশন দেবে সেটার ওপর নির্ভর করবে কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ ইভিএম ক্রয় করেছিল নির্বাচন কমিশন। একাদশ সংসদের ছয়টি আসনসহ গত পাঁচ বছরে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন এবং বেশির ভাগ স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের আগে পরে ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জেলার ৪০টিরও বেশি অস্থায়ী গুদামে ইভিএমগুলো সংরক্ষণ করা আছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার অভাবে অনেক ইভিএমই এখন ত্রুটিপূর্ণ। গত ৪ মাস ধরে টানা কিউসি করে ৪০ হাজার ইভিএমে ত্রুটি পেয়েছে নির্বাচন কমিশন।

 

 

সর্বশেষ খবর