নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, জনগণের রাজনৈতিক সব অধিকার খর্ব করে তারা দেশে কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। এ চেষ্টা সফল হবে না। সরকার পতনের খেলা সময়মতোই হবে। তখন আর এ সরকার ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা জনগণের সব সাংবিধানিক অধিকার হরণ করেছে। অর্থনীতি ধ্বংস করে দেশকে মহাবিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সোহরাব হাসান, জিল্লুর আহমেদ চৌধুরী, মোমিনুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লা কাওসার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০২১ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে এবারও আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ। এ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপসহ বিশ্বের ১১১টি দেশ আমন্ত্রণ পেয়েছে। দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরও এক ধাপ অবনমন হয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের গত ১৪ বছরের শাসনামলে দেশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটের মাধ্যমে তারা দেশকে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, সরকারের নির্বাহী আদেশে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম। এরপরও বাড়ছে লোডশেডিং, পাওয়া যাচ্ছে না নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস। গত ১৪ বছরের শাসনামলে বিরোধী মত এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের দমনের জন্য নানা কালা-কানুন ব্যবহার করে আসছে। এর একটি হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ আইনে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য এমনকি সরকারি দলের নেতাদের নিয়ে ফেসবুক বা অনলাইনে মত প্রকাশের কারণে মামলা, গ্রেফতার এমনকি রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০১৮ সালে ৩৪টি, ২০১৯ সালে ২৩টি, ২০২০ সালে ১৯৭টি এবং ২০২১ সালে ২৩৮টি মামলা হয়। ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী পূর্ববর্তী চার বছরে ৬১১টি মামলায় বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী, সাধারণ জনগণের পাশাপাশি জেলে যেতে হয়েছে ৫৩ জন সাংবাদিককে। এখন নতুন করে, উপাত্ত সুরক্ষা আইন নামে আরেকটি নিবর্তনমূলক আইন পাসের পাঁয়তারা চলছে। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত যন্ত্রে আড়িপাতার মাধ্যমে তারা জনগণের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার সাংবিধানিক অধিকার হরণ করবে।
মান্না বলেন, সরকার এখন দেশ চালানোর জন্য বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর কাছে হাত পাতছে। আইএমএফের ঋণের কিস্তি পাওয়ার পরও সরকারি হিসাবেই দেশে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার এবং দুঃশাসনের কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনক হারে কমেছে।