মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাঁচ সিটিতে ভোট প্রস্তুতি

ঈদের পর তফসিল, ইভিএম নাকি ব্যালট সিদ্ধান্তহীনতায় ইসি

গোলাম রাব্বানী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই চলতি বছর পাঁচ সিটি নির্বাচন শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে জুনের মধ্যে এসব সিটি নির্বাচন করতে ঈদুল ফিতরের পরেই তফসিল দেওয়ার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন সিটি ভোট নিয়ে তিন ধরনের পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথমত, শুধু গাজীপুরে এক দিন ভোট করার; দ্বিতীয়ত, খুলনা-রাজশাহী এক দিনে এবং বরিশাল ও সিলেটে আরেক দিনে ভোট করা। তৃতীয়ত, চার সিটিতে এক দিনে এবং গাজীপুর অন্যদিনে ভোট করার প্রাথমিক চিন্তা করা হচ্ছে। তবে সিটি নির্বাচনে ইভিএমের পাশাপাশি ব্যালটেও ভোটের পরিকল্পনা রাখা হচ্ছে।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ১১ মার্চ নির্বাচনী দিনগণনা শুরু হচ্ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের। আর ১৩ এপ্রিল নির্বাচনী ক্ষণগণনা শুরু হবে খুলনা; ১৩ এপ্রিল রাজশাহী; ১৪ মে বরিশাল এবং ৬ মে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী ক্ষণগণনা শুরু হচ্ছে। সিটি নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, জুনের আগে দু-একটা সিটি ভোট হবে। বাকিগুলো জুনের পরে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিটি ভোট শেষ করব। নির্বাচন উপযোগী হওয়ার শুরুর দিকে সিটি নির্বাচন করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আলমগীর বলেন, যেহেতু আমাদের জাতীয় নির্বাচন আছে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে, সেজন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন শেষের দিকে না করে প্রথম দিকে করা। আইন অনুযায়ী, কোনো সিটির মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণ করতে হয়। এ হিসেবে গাজীপুর সিটির নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে ১১ মার্চ থেকে। এ সিটির নির্বাচন ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। খুলনা ও রাজশাহী সিটির ক্ষণগণনা শুরু হবে ১৩ এপ্রিল। ১০ অক্টোবরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বরিশাল সিটি ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে ১৪ মে, ১৩ নভেম্বরের মধ্যে ভোট করতে হবে। সিলেট সিটি ৬ মে থেকে পরবর্তী নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে, ৬ নভেম্বরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে ২০ ডিসেম্বর। ১৯ জুন ২০২৪ সালের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, ১১ মার্চ থেকে ১০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে যে কোনো সময়ে গাজীপুরে নির্বাচন হতে পারে। সেই হিসেবে যেহেতু জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে, সেজন্য নির্বাচনগুলো আর্লি (আগে) করার চেষ্টা করব। মার্চের পরে যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। চার সিটির ভোট এক দিনে হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, এক দিনে হবে না। ছয়টি সিটি আছে। তার মধ্যে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনেক দেরি। ওটাকে আমরা ধর্তব্যের মধ্যে আনছি না। বাকি পাঁচটির ক্ষেত্রে হয়তো দুই দিনে হতে পারে। তিন দিনে হতে পারে। এই কমিশনার বলেন, জুন মাসের মধ্যে দুই সিটিতে ভোট করার ইচ্ছা আছে। তবে এখন পর্যন্ত দিন তারিখ ঠিক হয়নি। চূড়ান্ত কিছু হয়নি। যেগুলোর আগে ম্যাচিউরিটি (উপযোগী) শুরু হবে সেগুলো আগে হবে। সিটি নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, এগুলো নির্ভর করবে বাজেটের ওপরে। আমরা বাজেট চাইব। টাকা পেলে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করব। সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর সিসি ক্যামেরা নির্ভর করছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, সিসি ক্যামেরা ভোটের অনুষঙ্গ না। আইনে কোথাও বলা নাই সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে। এটা বাড়তি ব্যবস্থা এবং পরীক্ষামূলক ছিল। টাকা পেলে সব আসনে না করলেও ঝুঁকিপূর্ণ আসনে করব। সিটি ভোটগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার আগ্রহ আছে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, এটা ডিপেন্ড করবে। নতুন ইভিএম আসেনি। ইভিএমগুলোর ব্যাটারির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্ট করতে হবে। সার্ভিসিং করাতে হবে। সে জন্য টাকা লাগবে। সার্ভিসিং করিয়ে যদি সচল করতে পারি তার ওপরে নির্ভর করবে কতগুলো ইভিএম ব্যবহার করব। তবে কমিশনের ইচ্ছা ইভিএমে করা।

সর্বশেষ খবর