বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন অপব্যবহারে নিবন্ধকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

♦ সংশোধন হচ্ছে আইন ♦ ‘বন্ধন’ হচ্ছে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধনে

আকতারুজ্জামান

সংশোধন হচ্ছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সুপারিশ চূড়ান্ত করে ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়েছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়। গত বছর ডিসেম্বরে এ খসড়া সংশোধন পাঠানো হয়েছে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন তথ্য ব্যবস্থায় (বিডিআরআইএস) কর্মরতরা যেন পাসওয়ার্ড অপব্যবহার করতে না পারেন সে ব্যাপারেও নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা। এ ছাড়া বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন ব্যবস্থাপনায় ‘বন্ধন’ নামে একটি সফটওয়্যার চালু করবে আইন ও বিচার বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিভিল রেজিস্ট্রেশন অধিশাখার সিআরভিএস বাস্তবায়ন কমিটির সভা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সূত্র জানায়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ও বিধিমালা সংশোধনের সুপারিশ চূড়ান্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। সভায় জানানো হয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪ এর প্রস্তাবিত সংশোধনের খসড়া গত বছর ডিসেম্বরে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন তথ্য ব্যবস্থা (বিডিআরআইএস) ইউজার হিসেবে কর্মরতদের বিরুদ্ধে এই পদ্ধতি অপব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নিবন্ধক ও নিবন্ধক সহকারীদের দেওয়া এই পাসওয়ার্ড অপব্যবহার হচ্ছে কি না সে বিষয়ে মনিটরিং ও তদন্তপূর্বক চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এই পাসওয়ার্ড অপব্যবহার করলে রেজিস্ট্রার জেনারেলের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গেছে, বিডিআরআইএস সিস্টেমের নিরাপত্তা জোরদার করতে সব ব্যবহারকারীর ডিভাইস লক করা হবে।

এই সিস্টেমের পাসওয়ার্ড যেন কেউ হ্যাক করতে না পারে সেজন্য জেলা ও উপজেলার ইউজারদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার মাধ্যমে লগইন করার ব্যবস্থা করা হবে। পরবর্তীতে এটি ডিজিটাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে অধিকতর নিরাপদ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। তথ্যমতে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়ের মাধ্যমে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইউনিক আইডি জন্ম নিবন্ধনে ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু শিক্ষার্থীদেরও দেওয়া হয়েছে ইউনিক আইডি। তাদের সবার জন্ম তথ্য বিডিআরআইএস সিস্টেম থেকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের এনআইডি সিস্টেমে পাঠানোর ব্যাপারে আলোচনা হয় সভায়।

একইভাবে এনআইডি সিস্টেম থেকে ব্যক্তি-শিক্ষার্থীর বাবা মায়ের এনআইডি নম্বরসহ অন্য তথ্য বিডিআরআইএস সিস্টেমে সংরক্ষণের কথা বলা হয়। তবে এখন থেকে নতুন ইউনিক আইডি নেওয়ার সময় জন্ম নিবন্ধন নম্বর এনআইডি সিস্টেমে পাঠাতে বলা হয়েছে। এনআইডি সিস্টেমে নাগরিকদের এনআইডি/ইউনিক আইডির সঙ্গে যাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর সংরক্ষিত রয়েছে, তাদের যাবতীয় তথ্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সিস্টেম থেকে এপিআইয়ের (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস) মাধ্যমে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়ের সার্ভারে প্রেরণ করার কথা বলা হয়।

সিভিল রেজিস্ট্রেশন অধিশাখা সূত্র জানায়, আইন ও বিচার বিভাগের বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদনের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এই প্রকল্পে একটি সফটওয়্যার তৈরির জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জানা গেছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘ইস্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেক্টেভিটি (ইডিসি)’ প্রকল্পের মাধ্যমে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন সংক্রান্ত একটি সফটওয়্যার রয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগের বিবাহ ও তালাক নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও ‘বন্ধন’ নামে এই সফটওয়্যার চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে সিআরভিএস বাস্তবায়ন কমিটির সভা সূত্র জানায়, এই সফটওয়্যার চালু করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং আইন ও বিচার বিভাগের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠিত হবে।

সর্বশেষ খবর