কর্ণফুলী নদীর তলদেশে যান চলাচল এখন ‘অলীক স্বপ্ন’ নয়। দিন কয়েক বাদেই দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর নদীর বুক চিরে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ দিয়ে চলাচল করবে গাড়ি। এরই মধ্যে টানেলের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৭ শতাংশ, যা এপ্রিলের মধ্যে শতভাগ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ টানেল ঘিরে আরেক অর্থনৈতিক বিপ্লবের স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ। চীনের সাংহাই শহরের আদলে করা টানেলটি দেশের শিল্প-বাণিজ্য, পর্যটনসহ নানা ক্ষেত্রে রাখবে অসামান্য অবদান। বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘টানেলের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯৭ শতাংশ। এখন টানেলের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কাজ চলছে। আশা করছি আগামী এপ্রিলের দিকে টানেলের শতভাগ কাজ শেষ হবে।’ দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প বঙ্গবন্ধু টানেলের ভৌতিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯৭ শতাংশ। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে উভয় টিউবের পেভমেন্ট স্লেভ, পূর্ব অংশ ও পশ্চিম অংশের রেইন শেল্টারের আর্ক মেশ শেল ইনস্টলমেন্ট ও পেইন্টিং কাজ। আর ইলেকট্রোমেকানিক্যালের কাজ চলমান রয়েছে, যা শেষ হবে এপ্রিলের মধ্যে। কয়েক দিনের মধ্যেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে দেশের যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। টানেল ঘিরে পর্যটন, শিল্পায়নসহ অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। টানেলের মাধ্যমে পর্যটন নগরীর সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রামের যোগাযোগব্যবস্থার আমূল বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। কক্সবাজারের সঙ্গে দূরত্ব কমবে ৪০ কিলোমিটার। টানেল দিয়ে কর্ণফুলী নদী পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৫ থেকে ৬ মিনিট। টানেলের অপর প্রান্ত আনোয়ারায় গড়ে উঠছে ভারী শিল্প-কারখানা। কক্সবাজারের মাতারবাড়ীকে বাণিজ্যিক হাব করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। মাতারবাড়ী বাণিজ্যিক হাবের সঙ্গে দেশের যোগাযোগের সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে টানেল। এরই মধ্যে মাতারবাড়ীতে গড়ে উঠছে গভীর সমুদ্রবন্দর, দেশের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল, এলপিজি টার্মিনাল, অয়েল টার্মিনাল, গ্যাস ট্রান্সমিশন, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প, অয়েল রিফাইনারি, এনার্জি ও ফুড স্টোরেজ, ট্যুরিজম, এমব্যাঙ্কমেন্ট ও ওয়াটারফ্রন্ট ইকোনমিক জোন। এসব মেগা প্রকল্পে বিভিন্ন এলাকা থেকে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য শত শত গাড়ি চলাচল করবে। আর বঙ্গবন্ধু টানেল হবে চলাচলের সহজ মাধ্যম। এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টানেল পুরোদমে চালু হলে প্রতিদিন গড়ে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি চলাচল করবে। বছরে সে সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৬৩ লাখ। ২০২৫ সালে টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। এর মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী যানবাহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ ১ লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। ডিপিপি অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু টানেলে পুরোদমে চালু হলে ফিনানশিয়াল ও ইকোনমিক আইআরআরের পরিমাণ দাঁড়াবে যথাক্রমে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং ১২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া ফিনানশিয়াল ও ইকোনমিক ‘বেনিফিট কস্ট রেশিও (বিসিআর)’-এর পরিমাণ দাঁড়াবে যথাক্রমে ১ দশমিক শূন্য ৫ এবং ১ দশমিক ৫। ফলে টানেল জিডিপিতে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। চীনের সাংহাইয়ের ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’-এর আদলে চট্টগ্রাম শহর ও আনোয়ারাকে এক সূত্রে যুক্ত করতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তৈরি হয়েছে টানেল। এ টানেলের এক প্রান্তে রয়েছে আনোয়ারার ভারী শিল্প এলাকা; অন্য প্রান্তে চট্টগ্রাম নগরী, বিমান ও সমুদ্রবন্দর। বাংলাদেশ সরকার ও চায়নিজ এক্সিম ব্যাংক এ প্রকল্পে যৌথভাবে অর্থায়ন করেছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
শিরোনাম
- বিশ্বকাপ : বাংলাদেশের সামনে পড়তে পারে ইতালি
- শুল্কের হুমকি দিয়ে আট যুদ্ধের পাঁচটিই থামিয়েছি: ট্রাম্প
- নির্বাচনী হলফনামায় বিদেশি সম্পদের বিবরণীও বাধ্যতামূলক: দুদক চেয়ারম্যান
- হল ছাড়তে শুরু করেছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা
- ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে প্রাণ গেল সিলেটের যুবকের
- বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- টেস্টে নতুন উচ্চতায় তাইজুল
- ঢাকা উত্তরে প্রথম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের যাত্রা শুরু
- সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা আজ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফিরতে বিভাগীয় শহরে বাস সার্ভিস দেবে ডাকসু
- হল ছেড়ে মধ্যরাতে খোলা আকাশের নিচে ইডেন ছাত্রীরা, বিক্ষোভ
- ভিকারুননিসায় রবিবারের সব পরীক্ষা স্থগিত
- ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নতুন অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- টিভিতে আজকের কোন খেলা কোথায় দেখবেন
- ছাত্রাবাসে ফাটল : চাদর-বালিশ নিয়ে সড়কে শিক্ষার্থীরা
- আজ ঢাকার বাতাসের মান কেমন?
- পেরুর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
- ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল এলাকার মাটিতে ফাটল থেকে নমুনা সংগ্রহ
- ২৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি
- এই সময়ে গ্যাস কূপে ড্রিলিং কাজ বন্ধ রাখা শ্রেয়, ফেসবুকে আবহাওয়াবিদ পলাশ
অপেক্ষা নদীর তলদেশে যান চলাচলের
কর্ণফুলী টানেলের কাজ এপ্রিলের মধ্যে শতভাগ শেষ হবে
মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর